নাইম আবদুল্লাহ:
গত ১লা মার্চ (বুধবার) সিরাজগঞ্জ সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিল আয়োজিত স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে ‘প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট, ১৯৭৪ এবং প্রেস কাউন্সিল প্রণীত আচরণ বিধি’ নিয়ে মতবিনিময় করেন প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ।
এই মত বিনিময় সভায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'দেশব্যাপী সাংবাদিকদের সঠিক তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সঠিক তালিকা প্রণয়ন হলেই প্রেস কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।'
তিনি আরও বলেন, ' সাংবাদিকদের এ তালিকা প্রণয়নের উদ্দেশ্য কাউকে বাদ দেয়া বা বিড়ম্বনায় ফেলা নয়। বরং এটি একটি বড় ধরনের স্বীকৃতি স্বরূপ। খুব শিগগিরই নিজ নিজ গণমাধ্যমের নামসহ সাংবাদিকদের সঠিক তালিকা ওয়েবসাইটে দেয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনও যেকোন সাংবাদিকের সঠিক পরিচয় জানতে বা চিনতে পারবে। সাংবাদিকদের তালিকা তৈরির পেছনে কোন নেতিবাচক উদ্দেশ্য নেই। মিডিয়ায় কে কিভাবে কখন প্রবেশ করেছেন বা কার কতটুকু যোগ্যতা বা দক্ষতা আছে, তা বিশ্লেষণ করে পরে কাউকে বাদ দেয়া বা ছাটাই করা, এমন উদ্দেশ্য এ তালিকা তৈরির পেছনে নেই।'
জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার (যুগ্মসচিব), পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ ইরতিজা আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ, অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফ্রি-ল্যান্সার আবু নসর, বাসসের সিনিয়র সাংবাদিক আতাউর রহমান, সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস.এম.তফিজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে-খোদা লিটন, সাংবাদিক বাবু ইসলাম, আবদুল কুদ্দুস, জাকিরুল ইসলাম সান্টু, হারন-অর-রশিদ খান হাসান, শহিদুল ইসলাম ফিলিপস, এনামুল হক খোকন, হেলাল আহম্মেদ, সুলতানা ইয়াসমিন মিলি, সমকাল জেলা প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম খান রানা, সাংবাদিক ইসরাইল হোসেন বাবু, বিমল কুমার কুণ্ড, শফিকুজ্জামান শফিসসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সমকাল শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার চেক জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেন।
পরে শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বগুড়া থেকে মোবাইল ফোনে প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান এবং অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিনসহ জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র হালিমুল হক মিরুর ছোট ভাই হাফিজুল হক শহরের কালীবাড়ি মোড়ে শাহজাদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারধর করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বিজয়ের সমর্থক কলেজছাত্র ও মহল্লার লোকজন একযোগে বেলা ৩টার দিকে মেয়রের বাসায় হামলা চালান। এ সময় মেয়র হালিমুল হক মিরু তার শটগান থেকে গুলি করলে সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি শিমুল এবং তিনি তখন গুলিবিদ্ধ হন। একাধিক গুলি তার মাথা ও মুখে লাগে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার দুপুরে বগুড়া থেকে ঢাকায় আনার পথে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম ৩ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
< Prev | Next > |
---|