কক্সবাজার: উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে আঘাত হেনেছে। ঘণ্টায় ১৩৫ কি.মি গতিবেগে ঘূর্ণিঝড়টি এখন কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী উপকূল অতিক্রম করছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের মণিপুরে সরে যাবে ঘূর্ণিঝড় মোরা, বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে।
ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সেন্টমার্টিন ও শাহ্পরীর দ্বীপে বহু গাছপালা উপড়ে গেছে, কয়েকশ’ বাড়িঘর বিধ্বস্ত, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, উপদ্রুত এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মোরা’র প্রভাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও চাঁদপুরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হয়েছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোরা উপকূল অতিক্রমের সময় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উপকূলীয় সব জেলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করে এলাকায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সব রুটে নৌ-যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পটুয়াখালীতে ৫ শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল থেকে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। সাগর উত্তাল থাকায় অনেক মাছধরা ট্রলার এখনো নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে পারেনি। বন্দর এলাকাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
ভিয়েনা সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসনকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
< Prev | Next > |
---|