স্টাফ রিপোর্টার: দেশে ২ লাখ ৪ হাজার ৫৯৬ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য রয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন সংসদ কার্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল বুধবার দশম জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত ফেনী-৩ আসনের সাংসদ রহিম উল্লার প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন মন্ত্রী। সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী সেনাবাহিনীতে সামরিক সদস্য ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬১৭ জন, বেসামরিক ১৩ হাজার ৫০৮ জন। সেনাবাহিনীতে মোট আছে ১ লাখ ৬২ হাজার ১২৫ জন। আর নৌবাহিনীতে সামরিক ২১ হাজার ২৮১ জন, বেসামরিক ৩ হাজার ৮০০ জন। মোট ২৫ হাজার ৮১ জন। বিমান বাহিনীতে সামরিক ১৩ হাজার ৬৯৪ জন, বেসামরিক ৩ হাজার ৬৯৬ জন। মোট ১৭ হাজার ৩৯০ জন। এই তিন বাহিনীকে যুগোপযোগী করতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। রাষ্ট্রের বেসামরিক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রেষণে কাজের ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কোনো স্পষ্ট নীতিমালা নেই বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বুধবারের অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে তিনি এ কথা জানান। চট্টগ্রাম-৪ আসনের সাংসদ দিদারুল আলম জানতে চান, বেসামরিক পদে ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং প্রেষণ, পদায়নের ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা আছে কিনা। জবাবে আনিসুল হক বলেন, বেসামরিক পদে ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং প্রেষণে পদায়নের ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা নাই। পাসপোর্ট অধিদপ্তর, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্প, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসামরিক দপ্তরে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন। কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পদেও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা কর্মরত। তবে সামরিক বাহিনীর কতজন কর্মকর্তা বর্তমানে বেসামরিক পদে রয়েছেন, সে তথ্য প্রশ্নোত্তরে আসেনি। ভোলা-৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন আনিসুল হক। নতুন যুদ্ধ জাহাজ, হেলিকপ্টার, সমুদ্রে টহলের জন্য বিমান এবং সাবমেরিনসহ বিভিন্ন ঘাঁটির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য জনবল বৃদ্ধি ও সাংগঠনিক কাঠামো তৈরির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। এছাড়া নৌবাহিনীর জন্য দুপি মাল্টিরোল মেরিটাইম হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুলনা শিপইয়ার্ডে দুটি বড় আকারের টহল নৌজান তৈরির কাজ চলেছে। দুটি নতুন করভেট তৈরির জন্য ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে। সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরির জন্য ৩৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণের জন্য চীনের সঙ্গে নৌবাহিনীর একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া মাইন ওয়ারফেয়ারের সক্ষমতা বাড়াতে চারটি মাইন সুইপার এবং প্রশিক্ষণের জন্য একটি জাহাজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নৌবাহিনীর জন্য সমরাস্ত্র তৈরিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশে মিসাইল ও আইএফএফ (শত্রু-মিত্র চিহ্নিতকরণের যন্ত্র) তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান আনিসুল হক।
Â
< Prev | Next > |
---|