স্টাফ রিপোর্টার: সরকারের কাছ থেকে ‘আশ্বাস পেয়ে’ ধর্মঘটসহ সব ধরনের আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা।
শনিবার ঢাকার এফবিসিসিআই ভবনে এক সভায় বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) সহ সভাপতি এনামুল হক খান দোলন ধর্মঘট প্রত্যাহারের এই ঘোষণা দেন। তবে সভাকক্ষে উপস্থিত বাজুস সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার পরে অভিযোগ করেন, ধর্মঘট প্রত্যাহারের আগে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি সমিতির নেতারা। দুপুর দেড়টায় এফবিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি ও এফবিসিআইয়ের যৌথ সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন সেখানে আসেন বেলা আড়াইটার দিকে। তার আগে সম্মেলন কক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারটি খুলে ফেলা হয়।
সভাকক্ষে এসে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ আশ্বস্ত করেছেন- ‘আপনার কমিউনিটিকে বলতে পারেন, তারা যেন ধর্মঘটে না যায়। তাদের দাবির ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’। মহিউদ্দিন বলেন, আমরা প্রত্যাশা করব, সরকারের কোনো পক্ষ থেকে যেন ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্যানিক সৃষ্টি করা না হয়। ক্রিমিনাল অফেন্স আর ব্যবসা এক নয়; দুটোকে যেন মিশ্রিত করা না হয়।
যতক্ষণ পর্যন্ত নীতিমালা ও সত্যিকার অর্থে গাইডলাইন তৈরি না হয়, ঈদের আগে যেন সবাই স্বচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারেন, এটাই প্রত্যাশা। এরপর বাজুস সহসভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, আমরা আপনার কথায় আশ্বস্ত হয়েছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অশেষ ধন্যবাদ। আমরা আজকে থেকে সব ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলাম। তবে আমাদের অনুরোধ থাকবে, আপন জুয়েলার্সের যে স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে তা যেন সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। আমরা প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে আছি।
আপন জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে অনিয়ম করা হয়েছে, সেখান থেকে আতঙ্কের শুরু। এরপর কোনো স্বর্ণের দোকানে অভিযান হলে ব্যবসায়ীদের করণীয় কী- সে বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতির কাছে নির্দেশনা চান দোলন। ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে মঞ্চে উপস্থিত বাজুস সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার বলেন, আমাকে না জানিয়ে, আামার সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই এই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। যিনি ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন, তার তা করার কোনো এখতিয়ার নেই। পরে বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, সবার মতামত নিয়েই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে সভাপতি এ কথা বলেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেমে তা পরে জানিয়ে দেব। আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সোনা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দেওয়া না হলে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরুর ঘোষণা দিয়েছিল বাজুস। বনানীর হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের পরিবারের মালিকানাধীন আপন জুয়েলার্সের ১৫ দশমিক ৩ মণ সোনা এবং ৭ হাজার ৩৬৯টি হীরার অলঙ্কার জব্দ করে গত রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। শুল্ক গোয়েন্দারা বলছেন, ওই গহনার কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি আপন জুয়েলার্স। তাছাড়া জব্দ স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে আপনের ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্স বিবরণীর ‘বিস্তর ফারাক রয়েছে’ জানিয়ে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক মইনুল খান।
< Prev | Next > |
---|