zdfhk4স্টাফ রিপোর্টার: উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম বন্দর ও বহির্নোঙ্গরে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ করে দেওয়া হয় গতকাল সোমবার। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম জেলার চিকিৎসক ও নার্সসহ সব স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলার পর সতর্কতামূলক এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জেটি ও বহির্নোঙ্গরে জাহাজে পণ্য ওঠানো ও জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে জাহাজ থেকে যেসব পণ্য আগে জেটিতে নামানো হয়েছিল সেগুলো ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব সর্তকর্তা সংকেত ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়েছে। বন্দর সচিব বলেন, বন্দরের সব ভারি যন্ত্রপাতি এবং নিজস্ব জাহাজকে নিরাপদে রাখার কাজ শুরু হয়েছে।

আর লাইটারগুলোকে (পণ্যবাহী ছোট জাহাজ) উজানের দিকে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে অবস্থানকারী মাদার ভেসেল (পণ্যবাহী বড় জাহাজ) থেকে লাইটার জাহাজে করে পণ্য খালাস করে বন্দরের জেটিতে এবং দেশের অন্যান্য স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলার সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে সিভিল সার্জন ড. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সম্ভাব্য জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য চট্টগ্রামে ২৪০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে; খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হলেও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১টার দিকে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার রিয়াজুল কবির বলেন, বিমান চলাচল স্বাভাবিক আছে। সকাল থেকে শিডিউল মেনেই বিমান ওঠা-নামা করছে। অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি। তবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব রকম সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্বাসন বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বেলা সাড়ে ১১টায় জরুরি সভায় বসেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের স্টাফ কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমদ বলেন, সভা শেষে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং করণীয় স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সকালে ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে সরে বাংলাদেশ উপকূলের ৪৫০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো এই সংকেতের আওতায় থাকবে। এ ছাড়া পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৯টায় দিনের প্রথম জোয়ার শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় জোয়ার শুরুর কথা ছিল রাত ১০টা ৯ মিনিটে। সকাল থেকে বন্দর নগরীর আকাশ মেঘলা। সূর্যের দেখা না মিললেও গুমোট আবহাওয়ার কারণে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। চট্টগ্রামে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আদ্রতা ৭৮ শতাংশ।

সাম্প্রতিক