নাইম আবদুল্লাহ:
জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মুস্তাফা গত ৩ এপ্রিল (সোমবার) সিডনির বার্ডিয়া’য় এক ঘরোয়া আবৃত্তি সন্ধ্যায় অংশ নেন।
বরেণ্য এই আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মুস্তাফা’র একক কবিতা সন্ধ্যা প্রবাসী কবিতা প্রেমীদের জন্য এক নান্দনিক পরিবেশ তৈরী করেছিল।
মুষলধারে বৃষ্টি ও সাপ্তাহিক কাজের দিনকে উপেক্ষা করে কিছু গুনগ্রাহী ভক্তরা তার কবিতা শুনার জন্য সিডনির দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন।
শিমুল মুস্তাফা এক এক করে বাংলা সাহিত্যের নামকরা কবিদের কবিতার লাইনগুলো আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন। আমার পরিচয় – সৈয়দ শামসুল হক ,জেলখানার চিঠি – নাজিম হিকমত ,কেউ কথা রাখেনি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ,পাথর – ইয়াসিনুর রোমান ,আমি আজ কারো – নির্মলেন্দ গুন্ ,তুমার চোখ এত লাল – নির্মলেন্দ গুন্ ,রূচনা রবীন্দ্রনাথ-সুনেত্রা ঘটক ,বাতাসে লাশের গন্ধ – রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, দম্পতি গাঁথা -জয় গোস্বামী ,বাঁশি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বনলতাসেন -জীবনানন্দ দাশ, প্রতিদান – জসীম উদ্দিন ,পাহাড় চূড়া – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় , জন্মদিন – শুভ দাশগুপ্ত ,গল্পগুচ্ছ – শিমুল মুস্তাফা, আমাদের মা – হুমায়ন আজাদ । এছাড়াও পছন্দ ও অনুরোধের প্রায় সকল কবিতাই তিনি আবৃত্তি করে শোনান।শিমুল মুস্তাফা কবিতার মাঝে বলেছেন মধ্যবিত্ত বাঙালীর কথা, সংগ্রামের কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা, বাংলার মায়ের কথা, বাবার কথা। মন্ত্রের মত মুগ্ধ করে রেখেছিলেন উপস্থিত শ্রোতাদের।
শিমুল মুস্তাফা সিডনি ছাড়াও ক্যানবেরা, এডিলাইড ও ব্রিসবেনে আবৃত্তি সন্ধ্যায় অংশগ্রহন করেন। এছাড়াও আজ তিনি মেলবোর্নে এক কবিতার ওয়ার্কশপে অংশ নিচ্ছেন। আগামি ১০ই এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
তাঁর ৪১টি এ্যালবাম বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি শুধু একজন প্রথিতযশা শিল্পীই নন একজন সংগঠক, প্রশিক্ষক। আবৃত্তি তার পেশা নয়, নেশা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে নিজেকে যুক্ত করেছেন ব্যবসার সাথে। স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে তার পারিবার।
আশির দশকের গোড়ার দিক থেকেই জড়িয়ে পড়েন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। কন্ঠে আওয়াজ তোলেন। তার ভয়হীন কন্ঠ আজও ভয়হীন। একজন দূরন্ত, দুর্নিবার এবং চির আপোষহীন মানুষ শিমুল মোস্তফা।
< Prev | Next > |
---|