ঢাকা : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গত মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে ‘মোরা’। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে এটি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও কক্সবাজার উপকূলকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে কিছুটা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ছাড়াও উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, আজ সোমবার ভোরে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার, কক্সবাজার উপকূল থেকে ৪৯০, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬২০ ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আজ সকাল আটটায় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আরও ঘনীভূত হয়ে পরবর্তী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে কাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫২ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল থেকে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে মেঘলা ও থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করছে। রোববার দুপুরে ও রাতে বিভাগের কয়েকটি জেলায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও বরিশালে হয়নি।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ইমরুল কায়েস আজ সকালে জানান, নিম্নচাপের কারণে বঙ্গোপসাগর কয়েক দিন ধরে কিছুটা উত্তাল ছিল। কিন্তু আজ সকালে তা আরও উত্তাল হওয়ায় সাগরে মাছ ধরা ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসছে।
সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এবং পরদিন তা ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’য় রূপ নেয়। পরে সেটি দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে।
< Prev | Next > |
---|