সিলেট : সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি দেলওয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি হবে আজ (বুধবার) মধ্যরাতে। ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের। জোরদার করা হয়েছে কারাগারের নিরাপত্তা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জল্লাদ ও ফাঁসির মঞ্চ। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফাঁসি কার্যকরে চারজন জল্লাদসহ ১০ জনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জঙ্গি রিপনের পরিবারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার চিঠি মঙ্গলবার হাতে পাওয়ার পর ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি শুরু হয়। এখন শুধু অপেক্ষা কতৃপক্ষের নির্দেশনার।
বুধবার কতৃপক্ষের নির্দেশ আসার পর এখন ফাঁসির চূড়ান্ত প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। ফাঁসির রায় কার্যকরের আগে নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের সদস্যরা আরেকবার দেখা করার সুযোগ পাবেন।
কারাসূত্র জানায়,সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে জঙ্গি রিপনকে। ফাঁসি কার্যকরের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে,গত মঙ্গলবার রিপনের সঙ্গে তার পরিবারের লোকজন দেখা করেছেন। সাক্ষাতের সময় রিপনের মা সমিরুন্নেছা মিলি,বাবা আবু ইউসুফ,ভাই শামসুল মোহাম্মদ শিপন ও ভাবি সামিয়া উর্মি উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা প্রায় আধা ঘণ্টা রিপনের সঙ্গে কথা বলেন। যাওয়ার সময় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবদার রেখে যান ফাঁসির আগে যেন তাদের ফের সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, সিলেটে শাহজালাল(রহ.) এর মাজারের প্রধান ফটকে ২০০৪ সালের ২১ মে তৎকালিন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় তিনজন নিহত ও আহত হন ৭০ জন। এ ঘটনার মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুফতি হান্নান,শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুল,দেলওয়ার ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন সিলেটের দ্রুত বিচার আদালত।
রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা আপিল করলেও পূর্বের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আসামিদের আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ হওয়ার পর ১৭ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামিরা রিভিউ আবেদন করলে ১৯ মার্চ তা খারিজ হয়। গত ২১ মার্চ রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরদিন মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল এবং দেলওয়ার ওরফে রিপনের রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়।
গত ২৭ মার্চ জঙ্গি রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। এ আবেদনও নাকচ হয়। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
< Prev | Next > |
---|