স্টাফ রিপোর্টার: ভুটানের থিম্পুতে অটিজম বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছে, এ ধরনের জটিলতায় আক্রান্তদের সহায়তায় রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন মানুষ যে ধরনের প্রতিবন্ধিতারই শিকার হোক না কেন, সম্মানের সঙ্গে বাঁচার, সবার ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার তার আছে। ঝুঁকির মুখে থাকা নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সকল দেশের সরকারের উচিত এমন নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করা, যাতে কোনো নাগরিক অবহেলার শিকার না হয়।
গতকাল বুধবার সকালে শেখ হাসিনা থিম্পুর রাজকীয় আপ্যায়ন হলে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারস’ শীর্ষক তিন দিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, অটিস্টিকদের মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের সুযোগ করে দিতে রাষ্ট্রকে কার্যকর নীতি ও কর্মসূচি নিতে হব। আসুন, আমরা তাদের বহুমুখি প্রতিভার স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার করি এবং তাদের মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের সুযোগ করে দিই, যাতে করে তারা সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে পারে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোগবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিংও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অটিজম ও প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশ কর্মহীন থাকেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে অন্তর্ভুক্ত করতে তাদের জন্য উপযুক্ত কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের জন্য জীবনের প্রতিটি স্তরে শিক্ষা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান পর্যন্ত প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত সামাজিক ও চিকিৎসা সাহায্য দেওয়া আমাদের কর্তব্য। প্রধানমন্ত্রী অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার শনাক্ত করে তাদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষার ব্যবস্থা করার ওপর জোর দেন এবং অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (এএসডি) বিষয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কর্মসূচি নেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তঃদেশীয় সমন্বয়ের আহ্বান জানান।
তিনি অটিজম সচেতনতা তৈরিতে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন এবং আগামি দিনগুলোতে অটিজম ও প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত মানুষগুলোর জীবনমানে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা হোসেন ওয়াজেদও এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন; যিনি বাংলাদেশের জাতীয় অটিজম বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন। অটিজম নিয়ে কাজের জন্য তাকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশ ও ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে; কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে সূচনা ফাউন্ডেশন (সাবেক গ্লোবাল অটিজম), অ্যাবিলিটি ভুটান সোসাইটি (এবিএস) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া কার্যালয়। এ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য - ‘এএসডি ও অন্যান্য নিউরো ডেভেলপমেন্টাল সমস্যায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য কার্যকর ও টেকসই বহুমুখী কর্মসূচি’।
বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন: ভুটানে বাংলাদেশের নিজস্ব দূতাবাস ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিনের ভুটান সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিলের উপস্থিতিতে থিম্পুর হেজোতে শেখ হাসিনা চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দামঘো দর্জি জমি হস্তান্তর চুক্তিতে সই করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ভিত্তিফলক উন্মোচনের পর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে শেখ হাসিনা এবং রাজা জিগমে খেসার নামগিল পুরো জায়গাটি ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকও এ সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত মঙ্গলবার ভুটানে পৌঁছান শেখ হাসিনা। প্রথম দিনই দুই দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
গতকাল বুধবার সকালে থিম্পুর রয়্যাল ব্যাঙ্কোয়েট হলে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বিকালে তিনি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে অটিজম ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্ট সমস্যার যথায সমাধানে সক্ষমতা অর্জন শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন। ভুটান সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন তার মেয়ে সায়মা হোসেন ওয়াজেদ; যিনি বাংলাদেশের জাতীয় অটিজম বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন। অটিজম নিয়ে কাজের জন্য তাকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশ ও ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে। এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে সূচনা ফাউন্ডেশন (সাবেক গ্লোবাল অটিজম), অ্যাবিলিটি ভুটান সোসাইটি (এবিএস) ও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া কার্যালয়। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘এএসডি ও অন্যান্য নিউরো ডেভেলপমেন্টাল সমস্যায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য কার্যকর ও টেকসই বহুমুখী কর্মসূচি’। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী।
< Prev | Next > |
---|