anisul lowস্টাফ রিপোর্টার: অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট ১৫ জুলাইয়ের আগেই প্রকাশ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। গতকাল রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এদিন গেজেট প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে আরও দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছে, এটাই ‘শেষ সুযোগ’। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার চূড়ান্ত রায়ের পর আইন মন্ত্রণালয় ‘নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার’ খসড়া প্রস্তুত করে।

কিন্তু ওই খসড়াকে রায়ের পরিপন্থি বলে তা সংশোধন করে সরকারকে বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট।
এরপর সরকার দফায় দফায় সময় নিয়েও গেজেট প্রকাশ না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে সর্বোচ্চ আদালত।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে সহকারী জজদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আইনমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার পর সাংবাদিকরা তার কাছে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে জানতে চান।

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা বিচারকদের শৃঙ্খলার ওপর প্রভাব রাখবে। খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখে এটা করা উচিত, যেন এর মধ্যে এমন কিছু না থাকে, যা পরে প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এটি অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে দেখা হচ্ছে। আমি আশা করি এ মাসের ১৫ তারিখের আগেই গেজেট হয়ে যাবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আগামি ৯ জুলাই আইন মন্ত্রণালয় ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন। আমার মনে হয় সেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও প্রতিনিধি থাকবেন। সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে একটা শেষ ড্রাফট করার চেষ্টা করব। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার বিকল্প হিসেবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন আসছে কিনা- এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, “যে ড্রাফট এখনো শেষ হয়নি, সেটার উপর আপনারা যে অভিমত দিচ্ছেন, আমি বলব তা প্রিম্যাচিউর আলোচনা।”

২০০৬ সালে হওয়া তথ্য-প্রযুক্তি আইন ২০১৩ সালে সংশোধন করে ১০ বছর থেকে সাজা বাড়িয়ে ১৪ বছর কারাদ- করা হয়। আর ৫৭ ধারার অপরাধকে করা হয় অজামিনযাগ্য।
৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদ- এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা। ওই ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি দাবি করে সেটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যমকর্মীরা। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে তথ্য-প্রযুক্তি আইন থেকে ৫৭ ধারা বাদ দিয়ে আলাদাভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হলে এ নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ দূর হবে বলে এর আগে আশা দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী।

সাম্প্রতিক