আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে অমরনাথের তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাসে হামলার ঘটনায় ছয় নারীসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। গত সোমবার রাত প্রায় সাড়ে ৮টায় রাজ্যের অনন্তনাগ জেলায় হামলার এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
রাজ্যটিতে সংঘটিত সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর মধ্যে এ হামলা অন্যতম; এতে আরো অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন। পহলগাম থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে, একটি উপত্যকার শেষ প্রান্তে গিরিসঙ্কটের মধ্যে অবস্থিত একটি মন্দির পরিদর্শন শেষে ফিরে আসার সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তীর্থযাত্রীদের বহনকারী বাসটি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী লস্কর ই তৈয়বা হামলাটি চালিয়েছে এবং এ হামলার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তানি জঙ্গি ইসমাইল। হামলার শিকার বাসটি গুজরাটে রেজিস্ট্রিকৃত। পুলিশের সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাসটি তীর্থযাত্রার নিয়মাবলী ভঙ্গ করে সন্ধ্যা ৭টার পর মহাসড়ক ধরে যাচ্ছিল। নিরাপত্তাজনিত কারণে এই সময়ের পর তীর্থযাত্রীবাহী কোনো যানবাহনের মহাসড়ক ধরে চলাচল নিষেধ। ফেরার পথে বাসটি বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে দেরির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
বাসটি অমরনাথ যাত্রার সরকারি ট্যুরেরও অংশ ছিল না বলেও খবর হয়েছে। এর অর্থ বাসটির জন্য বাধ্যতামূলক কোনো পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও ছিল না।
প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রথমে পুলিশের একটি সাঁজোয়া গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে, সাঁজোয়া গাড়ি থেকেও পাল্টা গুলি ছোঁড়া হয়। এ সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেপরোয়া গুলিবর্ষণ শুরু করলে তীর্থযাত্রীরা তার শিকার হন।
এক যাত্রী বলেন, গোলাগুলি শুরু হওয়ার সময় আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম, দুইপাশ থেকেই গুলি শুরু হয়। সেখানে কতোজন ছিল তা জানি না আমরা। এর আগে একই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাস হামলার ঘটনাস্থল থেকে ৬০০ মিটার দূরের একটি নিরাপত্তা তল্লাশিচৌকিতেও গুলিবর্ষণ করেছিল বলে জানা গেছে। অমরনাথ যাত্রার অন্যান্য তীর্থযাত্রীদের মতো এই বাসটির যাত্রীরাও জম্মু থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন।
এক বিবৃতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুফতি বলেছেন, আমাদের মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। এই জঘন্য অপরাধে জড়িতদের শিকড় উপড়ে ফেলতে একটি পাথরও উল্টানো ছাড়া ফেলে রাখবো না আমরা। হামলায় আহতদের দেখতে অনন্তনাগের হাসপাতলে গিয়েছিলেন তিনি।
একে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বর্ণনা করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘কাপুরুষোচিত এসব হামলার কাছে’ ভারত কখনো নতি স্বীকার করবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। ৪০ দিনব্যাপী দক্ষিণ কাশ্মীরের পর্বতমালার উঁচুতে অবস্থিত অমরনাথ গুহামুখি যাত্রাটি ২৮ জুন শুরু হয়েছে। এই যাত্রা উপলক্ষে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংসহ তীর্থযাত্রীদের ও তাদের যাতায়তের পথগুলোর নিরাপত্তায় ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
< Prev | Next > |
---|