স্টাফ রিপোর্টার: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সম্মেলন কক্ষে এ সংলাপ শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবারও এ সংলাপ হবে। গতকাল বুধবার সংলাপ শেষে বেরিয়ে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের অনেকেই বলেছেন, তাঁরা আগামি একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ যাতে নিশ্চিত করা হয়, সেই বিষয়টির প্রতিই জোর দিয়েছেন। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নূরুল হুদা। এ ছাড়া চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বুধবার ৩৪ জন গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিক নেতা সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। তার মধ্যে ২২ জন অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে যুগান্তরের সাইফুল আলম, মানবজমিনের মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলোর আনিসুল হক ও সোহরাব হাসান, ভোরের কাগজের শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবারের সংলাপের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন ৩৭ জন। সংলাপে কমিশন প্রণীত নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ উপস্থাপন করে এ বিষয়ে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মতামত নেওয়া হবে। তাঁদের পরামর্শ ও মতামতের ওপর ভিত্তি করে কমিশন আগামি সংসদ নির্বাচনের জন্য তাদের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপের আলোকেই সংলাপের এজেন্ডা বা কার্যপত্র তৈরি করা হয়েছে। সংলাপে আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যমান ইংরেজি আইন কাঠামো বিশেষ করে ‘দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার, ১৯৭২ এবং দ্য ডিলিমিটেশন অব কনস্টিটিউয়েন্সিস অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬’ যুগোপযোগী করে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন। বিগত নির্বাচনসমূহের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অবৈধ অর্থ এবং পেশি শক্তির ব্যবহার রোধে আইনি কাঠামো সংস্কার। জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যা, সংসদীয় এলাকার আয়তন, প্রশাসনিক অখ-তা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ। নির্বাচন প্রক্রিয়া যুগোপযোগী ও সহজ করতে আইনি কাঠামো ও প্রক্রিয়ার সংস্কার; প্রবাসী ভোটারদের ভোটদান নিশ্চিত করার বিষয়ে একটি আইনি কাঠামো তৈরি। কর্ম পরিকল্পনার বিভিন্ন কাঠামোকে যুগোপযোগী করা। নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ নিশ্চিত করা। ভোটকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করা। নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও নিবন্ধত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মপরিকল্পনার বাইরে নতুন প্রস্তাব। ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে গত ১৬ জুলাই দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও নারী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসির এই মতবিনিময়। এ নিয়ে ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হয়েছে। ধারবাহিক সংলাপে সব অংশীজনের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের কাছেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিইসি।
< Prev | Next > |
---|