rana plazaস্টাফ রিপোর্টার: শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের প্রায় ৪২ দশমিক ২ শতাংশ এখনও বেকার রয়ে গেছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘অবিস্মরণীয়, অমার্জনীয় : রানা প্লাজা’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড। গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অ্যাকশনের এইডের ব্যবস্থাপক নুজহাত জেবিন। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত এক হাজার ৪০৩ জন শ্রমিকের ওপর জরিপ চালায় সংস্থাটি।

গবেষণায় ৬০৭ জন মৃত শ্রমিকের পরিবারকেও নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে সেখানে থাকা পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকসহ ১১০০ জনের বেশি প্রাণ হারায়। ধ্বংসস্তুপের নিচের পড়ে গুরুতরভাবে আহত ও পঙ্গু হওয়ার পাশাপাশি নিখোঁজ হন অনেকেই। গবেষণায় দেখা যায়, ৫৭ শতাংশ আহত শ্রমিক বিভিন্ন চাকরি বা আত্মকর্মসংস্থানে যুক্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে ৪২ দশমিক ২ শতাংশ এখনও বেকার। আহত বেকার এই শ্রমিকদের মধ্যে ২৬ শতাংশ জীবিকার জন্য কোনো পরিকল্পনা করতে পারছেন না। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ পরে কাজে ফেরেন। পরের বছর ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ কাজে ফিরতে পারেন। ২০১৫ সালে কাজে ফেরা শ্রমিকদের হার দাঁড়ায় ৪৪ শতাংশ। এর দুই বছর পর ২০১৭ সালে এই হার হয় ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ। বর্তমানে ৪২ দশমিক ২ শতাংশ শ্রমিক বেকার রয়েছেন।

গবেষণার প্রতিবেদন সম্পর্কে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, চার বছর পরও এত বিশাল সংখ্যক শ্রমিকদের এই অবস্থা অত্যন্ত দুঃখজনক।

আহত ও নিহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের চুইয়ে চুইয়ে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি, যা দেওয়া হয়েছে তা আর্থিক সহযোগিতা। গবেষণায় বলা হয়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত আহতদের মধ্যে ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ শারীরিকভাবে সেরে উঠেছেন। মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশের অবস্থা। ১৩ দশমিক ১ শতাংশের শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৭ দশমিক ২ শতাংশ মানসিকভাবে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছ্নে। ৩০ দশমিক ৮ শতাংশের মানসিক আঘাত রয়ে গেছে। স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন ১২ শতাংশ মানুষ। শারীরিক ও মানসিক এই অবস্থাকে বেকারত্বের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ড. খলিলুর রহমান, ওয়ার্কার্স সেফটি ফোরামের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কর্মসূচি ব্যবস্থাপক টো পোটিয়াইনেন, সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক কে জি মোয়াজ্জেম হোসেন, বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ওয়ার্কার্স সেফটির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর পল এলওয়ার্ড রিগবি প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সাম্প্রতিক