চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুরের শিবনগর এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান 'অপারেশন ঈগল হান্ট' স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আজকের মতো অভিযান স্থগিত করার কথা জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মুজাহিদুল ইসলাম।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ (এসএজি)-এর উপ পুলিশ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার ঘটনাস্থলের সামনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে অভিযান আবারও শুরু করা হবে।
ভেতরে কয়জন জঙ্গি রয়েছে, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি। সুতরাং কয়জন আছে তা বলা যাচ্ছে না।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গিরা চার থেকে পাঁচটি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমাদের ধারণা, এরা পুরাতন জেএমবির সদস্য।’ গোপনে খবর পেয়ে এখানে আভিযান চালানো হয় বলেও এসময় উল্লেখ করেন তিনি।
বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সদস্যরা। এরপর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সোয়াট টিমের সদস্যরা অভিযান শুরু করেন। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’।
বাড়ির ভেতর আবু বক্কর নামে এক জঙ্গি ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজন থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সিটিটিসির সদস্যরা। একটি আমবাগানের ভেতর বাড়িটির অবস্থান। ভোরবেলা বাড়িটি ঘেরাও করার পরপরই কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাধারণ লোকজনের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
সিটিটিসি সূত্রে আরও জানা গেছে, বাড়ির মালিকের নাম ঝিন্টু হাজি। তিনি সেখানে থাকেন না। আবু বক্কর নামের একজন প্রায় দুই মাস আগে বাড়িটি ভাড়া নেয়। স্ত্রীকে নিয়ে সে ওই বাড়িতে ওঠে। এই আবু বক্কর জঙ্গি বলে ধারণা পুলিশের।
কাউন্টার টেরোরিজমের এক কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকালে প্রথমে কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার তিনটি বাড়ি ঘেরাও করা হয়। তবে সেখানে জঙ্গির কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পরে শিবগনগর এলাকায় অন্য একটি বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশি শুরু করতে যায় কাউন্টার টেরোরিজমের সদস্যরা। এসময় ওই বাড়ি থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। জবাবে পুলিশও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, 'মঙ্গলবার রাত থেকেই সিটিটিসি'র সদস্যরা ওই বাড়িতে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেন। ভোরের দিকে জঙ্গিরা গ্রেনেড ছুড়েছে বলে শুনেছি। তবে আমি তখন সেখানে ছিলাম।'
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'সিটিটিসি কাজ করছে। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। তবে ভেতরের পরিস্থিতি কী তা বলতে পারবো না। শুনেছি ভেতর থেকে জঙ্গিরা গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।'
< Prev | Next > |
---|