আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর কোরিয়া এখনই দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম এবং যুক্তরাষ্ট্রের মূলভূখ-ে হামলার সক্ষমতা অর্জন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মনে করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় এই শঙ্কা প্রকাশ করেন টিলারসন।
তিনি বলেন, যদি নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে বিপর্যয়কর ফলাফল নেমে আসবে। উত্তর কোরিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের মূলভূখ-ে আঘাত হানার সক্ষমতা অর্জন এখন হয়তো শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পূর্ণ বাস্তবায়নে নিজেদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে না বলেও অভিযোগ করেন টিলারসন। তিনি বিশেষ করে চীনের প্রতি প্রভাব খাটিয়ে উত্তর কোরিয়ার বানিজ্য সংযোগ নিয়ন্ত্রণের কথাও বলেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, কোরীয় পেনিনসুলায় পরমাণু সমস্যা সামধানের চাবি চীনের হাতে নেই।
তিনি বলেন, এ সমস্যা সমাধানে কে প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বা কে ভুল, কে সঠিক এসব নিয়ে বিতর্ক এখন বাদ দেওয়া প্রয়োজন। বরং এখন গুরুত্বের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা পুনরায় শুরুর সময় হয়েছে।
তার জবাবে টিলারসন বলেন, আমরা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার টেবিল থেকে আমাদের সরে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করবো না, অতীতের রেজ্যুলেশন লঙ্ঘনের জন্য আমরা তাদের পুরস্কৃত করবো না, আলোচনার টেবিলে তাদের খারাপ আচরণের জন্য তাদের পুরস্কৃত করবো না। উত্তর কোরিয়াকে থামাতে যদি প্রয়োজন পড়ে তবে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে বলেও সতর্ক করেন টিলারসন। যদিও ওয়াং মনে করেন, কথা বলা এবং আলোচনাই এ সমস্যা সমাধানের ‘একমাত্র পথ’।
তিনি বলেন, শক্তির প্রয়োগ এই বিবাদের সমাধান নয়। বরং সেটা শুধুমাত্র বড় বিপর্যয়ই ডেকে আনবে। বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, কোরীয় উপদ্বীপের চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান তিনি চান। এজন্য উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করছেন তিনি। তবে সামরিক অভিযানের বিষয়টিও তার বিবেচনায় রয়েছে। উত্তর কোরিয়াকে নিয়ন্ত্রণে শক্তি প্রয়োগ ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী গেনাদি গাতিলভ।
তিনি বলেন, নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া এবং কোরীয় উপদ্বীপে মার্কিন নৌ-স্ট্রাইক গ্রুপের উপস্থিতি ‘হুমকি’ বলে মনে করে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী টার্মিনাল হাই অ্যালটিটুড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ব্যবস্থা মোতায়েনের কাজ শুরু হওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন ও রাশিয়া। গাতিলভ এ কা-কে ‘উৎপাত মূলক’ এবং ওয়াং উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়া সব পক্ষের ‘বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত’ করবে বলে মনে করেন।
< Prev | Next > |
---|