আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে জাতিসংঘের নেওয়া সিদ্ধান্তটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। মার্চে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে সেখানে একটি সত্য অনুসন্ধানকারী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সু চি বলেন, ‘আমরা এ সিদ্ধান্তে রাজি নই।’ বর্তমানে বেলজিয়াম সফররত সুচি যখন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনৈতিক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনির সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করছিলেন তখন এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবটির সঙ্গে নিজেদেরকে বিযুক্ত রেখেছি কারণ ওই এলাকায় সত্যিকারে যা ঘটছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রস্তাবটি করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।’
সু চি জানান, অঞ্চলের ‘সত্যিকারের প্রয়োজন’ অনুযায়ী সুপারিশ করা হলে তা খুশি মনে তার দেশ মেনে নেবে। তিনি বলেন, ‘যেসব সুপারিশ রাখাইনের দুই সম্প্রদায়কে আরও বিভক্ত করে দেবে তা আমরা গ্রহণ করব না। কারণ, এসব সুপারিশ যেসব সমস্যা সেখানে সব সময়ই ঘটছে, তার সমাধানে কোনও কাজে লাগবে না।’
রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনাকে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই এড়িয়ে যাচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তাও মানতে রাজি নন সু চি। তার দাবি এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে গত শতকের ৮০ এর দশক থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শিরণার্থী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের মিয়ানমারের নাগরিক বললেও মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কার্যত কোনওদিনই তা স্বীকার করা হয়নি। তাদের ফিরিয়ে নিতে বার বার আহ্বান জানানো হলেও মিয়ানমারের সাড়া পাওয়া যায়নি। এরইমধ্যে গতবছর অক্টোবরে চেকপোস্টে হামলায় ৯ সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী পুলিশ একযোগে রোহিঙ্গা দমনে অভিযান শুরু করে। মিয়ানমারের সেনাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হত্যা,ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ ওঠে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরেুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকা-েরও অভিযোগ তোলা হয়। রোহিঙ্গা নির্যাতন ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’র শামিল বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা।
< Prev | Next > |
---|