স্টাফ রিপোর্টার: উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলোর প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় দুটোই কমেছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছর সব মিলিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৬শ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রতিশ্রুতি আদায় বা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে মাত্র ৩৮৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের। আর ৪১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের অর্থছাড় করার লক্ষ্য থাকলেও ৯ মাসে অর্থছাড় হয়েছে মাত্র ২৩১ কোটি ডলার। ফলে দাতাদের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় করেছে ২৩১ কোটি ডলার। তার মধ্যে ঋণ হিসেবে ছাড় হয়েছে ২০১ কোটি ৯১ লাখ ডলার আর অনুদান হিসেবে ছাড় হয়েছে ২৯ কোটি ৬ লাখ ডলার। অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ছাড়ের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম। গতবছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ২৫৭ কোটি ১১ লাখ ডলার। তার মধ্যে ঋণের পরিমাণ ২১৬ কোটি ৭৪ লাখ এবং অনুদান ৪০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরের ৯ মাসে প্রতিশ্রুতি এসেছে মোট ৩৮৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। তার মধ্যে ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৩৫০ কোটি ৫২ লাখ ডলার আর অনুদানের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৩৪ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল ৩৮১ কোটি ডলার। তার মধ্যে ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ৩৩৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার আর অনুদানের প্রতিশ্রুতি ছিল ৪১ কোটি ১৫ লাখ ডলার। তাছাড়া অর্থবছরের শেষ দিকে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। তা হলে প্রতিশ্রুতি আদায় বেড়ে যাবে। তাছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হারও শেষ দিকে বেশি হয়ে থাকে। ফলে অর্থছাড়ও শেষ দিকে বাড়তে পারে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশগুলোকে ঋণের সুদ ও আসল বাবদ ৮৩ কোটি ১৩ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে পরিশোধ করা হয়েছিল ৭৬ কোটি ৫ লাখ ডলার।
সূত্র আরো জানায়, সরকার আগামী অর্থবছরে দাতাদের প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি অর্থছাড় আদায় করতে চায়। ওই সময়ে প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্য ৬শ কোটি ডলার রাখা হচ্ছে। আর অর্থছাড় বাড়িয়ে ৭১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার পর্যন্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। মূলত পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অবকাঠামো খাতে বেশ কিছু প্রকল্পকে সামনে রেখে ওই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে সরকার। বর্তমানে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট বেশ কিছু বড় প্রকল্প চলমান রয়েছে। অবকাঠামো খাতে বড় প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই আসছে নতুন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দৃশ্যমান হবে। ওই কারণে ওসব প্রকল্পে বড় অংকের বৈদেশিক সতায়তা ব্যয়ে প্রয়োজন হবে। সে অনুযায়ি নতুন অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
< Prev | Next > |
---|