fhjdff1স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় ঘিরে পুলিশের অভিযানে নিহত দুইজন নব্য জেএমবির সদস্য বলে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহম্মেদ জানিয়েছেন।

গতকাল রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। আরেকজন আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণে নিহত হন। এরা দুজনই নব্য জেএমবির সদস্য। নিহত একজনের নাম তুহিন বলে জানালেও আরেকজনের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
সকালে জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, গতকাল রোববার ভোর থেকে অভিযানের মধ্যে ওই বাড়ি থেকে বোমা ছোঁড়া হলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। জেলা পুলিশ ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা গত শনিবার রাতে উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নে বজ্রাপুর গ্রামে একতলা একটি টিনশেড বাড়ি ঘিরে ফেলে। গতকাল রোববার ভোরে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা সেখানে অভিযান শুরু করে। গোলাগুলির মধ্যে বাড়ির ভেতর থেকে বোমা ছোঁড়া হয় বলে পুলিশ সুপার জানান।

তিনি বলেন, বাড়ির ঠিক বাইরে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। ভেতরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আরও একজন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।” ওই বাড়ির মালিক জহুরুল ইসলাম, তার ছেলে জসিম এবং আলম ও আরিফ নামের আরও দুইজনকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশের এসআই মহসীন আলীকে আহত অবস্থায় যশোরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
নিরাপত্তার কারণে ওই বাড়ির আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। কাছেই একটি মাঠে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স এনে রাখা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওই বাড়ির কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গত শনিবার রাত থেকে ঘিরে রাখা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলায় সরাফত নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন আরেকটি বাড়িতে অভিযান গতকাল রোববার দুপুরে শেষ হয়েছে বলে ডিআইজি জানিয়েছেন। ডিআইজি দিদার আহম্মেদ বলেন, বেলা পৌনে ১টার দিকে লেবুতলার বাড়িতে অভিযান শেষ হয়েছে। সেখান থেকে আটটি বোমা ও একটি ৯ এমএম পিস্তল উদ্ধার এবং দুইজনকে আটক করা হয়।
তবে আটকদের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
এর আগে ওই বাড়িতে বিস্ফোরক থাকার তথ্য ছিল বলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি সাইফুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।

সদর থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, লেবুতলার ওই জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়েই কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিযান শুরু হয়েছিল। ওই বাড়ি ঘিরে ফেলার পর তারা মহেশপুরের আস্তানার খবর পান এবং সেখানে অভিযান শুরু হয়।

সকালে সদর থানার ওসি হরেন্দনাথ সরকার বলেছিলেন, “আমরা বাড়িটি ঘিরে রেখেছি। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল এলে পরে ভেতরে অভিযান চালানো হবে।” এর আগে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে আব্দুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
দুই দিনের অভিযান শেষে ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই অভিযানের এক সপ্তাহের মাথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আরেক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে সোয়াটের ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ শেষে গত ২৭ এপ্রিল চারজনের লাশ পাওয়া যায়, যারা নিজেদের ঘটানো বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশের ভাষ্য।

সাম্প্রতিক