awetgfgnb1স্টাফ রিপোর্টার: বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট বা বিওপি) বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতিও ব্যাপকহারে বাড়ছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস শেষে (জুলাই-মার্চ) বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৭৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ২২৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৪৭ শতাংশ। এক মাস আগে অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ঘাটতি ছিল ৬০৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৯৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। মূলত দেশের আমদানি ব্যয় যে হারে বাড়ছে, সে হারে রপ্তানি আয় না বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে ইপিজেডসহ রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ২ হাজার ৫৩৩ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৪৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৪ শতাংশ। আর ইপিজেডসহ পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ২৩৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৯১৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১১ শতাংশ। মূলত আমদানি ব্যয় যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় রপ্তানি আয় না বাড়াতেই বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাছাড়া রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক কমে গেছে। যা বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্যে প্রভাব ফেলেছে।

সূত্র জানায়, প্রবাসী আয় আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় সরকারের চলতি হিসাবের ভারসাম্য ফের ঋণাত্মক হয়ে গেছে। ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরজুড়ে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল। তাতে বৈদেশিক দায় পরিশোধে সরকারকে বেগ পেতে হয়নি। গতবছরের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের মার্চ শেষে চলতি হিসাবে ১৩৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ৩৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ওই সময়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকের বেতনভাতা পরিশোধে সেবামূল্য ব্যয় বেশি হওয়ায় চলতি হিসাবে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। তার আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে বিওপি ৪৪ কোটি ডলারের ঘাটতি (ঋণাত্মক) নিয়ে বছর শেষ হয়। পরে ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে তা ইতিবাচক ধারায় আসে। ওই অর্থবছরে বিওপি উদ্বৃত্ত ছিল ২৩৯ কোটি ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ১৫৫ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত।

সূত্র আরো জানায়, এ সময়ে সেবা খাতে বিদেশি নাগরিকদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৫১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ সেবা খাতে আয় করেছে ২৭২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ খাতে ঘাটতি হয়েছে ২৪৫ কোটি ডলার। তবে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। গত দুই অর্থবছরে উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক থেকে ঋণাত্মক ধারা চলছে।

 

সাম্প্রতিক