আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বুশ প্রশাসনের জঙ্গিবাদবিরোধী 'অনন্ত যুদ্ধ'র মতো করেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াই থামবে না।
প্যারিস হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় এ কথা বলেন তিনি। এর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জঙ্গিবাদ নির্মূলে অব্যাহত লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জাকার্তায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকের আগ মুহর্তে জঙ্গিবাদ নিয়ে নিজের অবস্থান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই তার ইন্দোনেশিয়া সফর শেষ হচ্ছে। পেন্স বলেন, ‘যে কোনও অবস্থায় যে কোনও স্থানে জঙ্গি হামলা হতে পারে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র তার লড়াই অব্যাহত রাখবে।
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় এক পুলিশ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও দুজন। পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন হামলাকারীও। ইতোমধ্যে এই হামলার দায়ভার স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। তবে আইএসের দায় স্বীকারের
আগেই ঘটনাকে জঙ্গি হামলা আখ্যা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বস্তুত সেই বুশ যুগের জঙ্গিবাদবিরোধী অনন্ত যুদ্ধের কায়দায় হাঁটতে দেখা যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। শপথ গ্রহণের পর দেওয়া বক্তব্যেই ট্রাম্প ‘সভ্য পৃথিবী’কে ঐক্যবদ্ধ করে বিশ্ব থেকে ‘র্যাডিক্যাল ইসলামি সন্ত্রাসবাদ’কে সমূলে উৎপাটন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে দর্শকদের মধ্যে বেশ চাঞ্চল্য দেখা গেলেও তা মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
বুশ ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’কে ‘ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। যে যুদ্ধ প্রকৃতপক্ষে ‘ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’র রূপ নিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্যের বাসনায়। ট্রাম্প অবশ্য ‘ক্রুসেড’ শব্দটি ব্যবহার করেননি। যুদ্ধের প্রতি নিরঙ্কুশ সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, “যখন আপনি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মন খুলে দেবেন, তখন সেখানে বিদ্বেষের কোনও স্থান থাকে না। যেমনটা বাইবেলে বলা হয়, ‘যখন ঈশ্বরের মানুষেরা একত্রে বসবাস করে তখন তা হয় অত্যন্ত আরামদায়ক ও সুখকর’।”
ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘আমাদের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মহান নারী-পুরুষদের দ্বারা আমরা সুরক্ষিত। ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করছেন।’ এভাবেই ‘পবিত্র যুদ্ধের’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এক ‘ধর্মযুদ্ধের’ অনুমোদন দেন তিনি। এরপর মধ্যপ্রাচ্যে জোরদার করে তোলেন প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যুদ্ধকে। বিশ্লেষকরা তার মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে আগ্রাসন বাসনা হিসেবেই দেখছেন।
< Prev | Next > |
---|