teleniparaআন্তর্জাতিক ডেস্ক : হুগলীর ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ায় গঙ্গায় জেটি ভাঙার ঘটনা এখন ঘুরছে সকলের মুখে মুখে। কোনও প্রকার জলযানের দুর্ঘটনা নয়, নদীর পারে জেটির উপর দাঁড়িয়ে থেকেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছে বহু মানুষকে। প্রাণ গিয়েছে ১২ জনের। এখনও নিখোঁজ অনেকে।

জেটি দুর্ঘটনা নিয়ে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে প্রশাসনকে। খেয়া পারাপারের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারকেও দুষছেন অনেকে।

কিন্তু, গঙ্গা নদীর দুই পারের বাসিন্দাদের মতে তেলেনিপাড়ার দুর্ঘটনার জন্য শুধু মাত্র প্রশাসন দায়ী নয়। দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ, নদীতে বান দেখার জন্য সাধারণ মানুষের প্রবল উৎসাহ। এপ্রিল-মে মাসে প্রকৃতির নিয়মে বান আসে গঙ্গা নদীতে।

চির পরিচিত নদীতে সমুদ্রের মতো বিশাল ঢেউ দেখতে সাধারণের আগ্রহ প্রবল। গঙ্গার দুই পারের মানুষের মধ্যেই এই বান দেখার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া বা উলটো দিকের শ্যামনগর, ইছাপুর বা ব্যারাকপুরের ঘাট গুলিতে বান আসার সময় প্রচুর ভিড় হয়।

অনেকে বাড়ির ছোটদের নিয়ে আসেন নদীর সমুদ্রের রূপ দেখাতে। মিনিট খানেকের বিশাল ঢেউ দেখতে গঙ্গার পার লাগোয়া ঘাটগুলিতে হাজির হন শতাধিক মানুষ। নদীর দুই পারেই হুগলী শিল্পাঞ্চলের অনেক কারখানা থাকায় নদীর পারের বিস্তীর্ণ এলাকা চলে গিয়েছে সেই সব কারখানার দখলে। তাই বান দেখতে ভরসা ঘাট বা ঘাটের জেটি। প্রবল ভিড় আর বিশাল জলোচ্ছ্বাস সামাল দিতে না পেরেই ভেঙে পড়েছে তেলেনিপাড়ার বাঁশের জেটি। এমনই মনে করছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।

দুর্ঘটনার সময়ে জেটিতে দাঁড়ানো সকলেই যাত্রী ছিলেন না। এমন অনেকেই ছিলেন যারা নদীতে বান দেখতে এসেছিলেন।

দ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ার অস্থায়ী জেটিতে দুর্ঘটনার ভয়াবহতার পিছনে রয়েছে আরও একটি বড় কারণ। উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলী জেলা লাগোয়া গঙ্গায় পূর্ব পারের তুলনায় পশ্চিম পারের গভীরতা অনেক বেশি। সেই কারণেই নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসের সময়ে খুব সহজেই তলিয়ে গিয়েছেন অনেকে। একইসঙ্গে গভীরতা বেশি থাকায় নদীতে ¯্রােতের গতিবেগও ছিল বেশি। যা জেটি ভাঙার দুর্ঘটনার ভয়াবহতার একটা বড় কারণ।

গত বৃহস্পতিবার তেলেনিপাড়ার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা শাসক সঞ্চয় বনশল, পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। রাজ্যের পরিবহন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে ভদ্রেশ্বর সংলগ্ন এলাকায় চারটি অস্থায়ী জেটি বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

সাম্প্রতিক