motamotএ.কে.এম শামছুল হক রেনু

বড় বড় কথা, কাজ ও প্রতিশ্রুতির সমন্বয়হীনতা, অমার্জনীয় অপরাধ দিনের পর দিন দেশের শাসন প্রশাসন থেকে শুরু করে সবকিছুকে কেন যেন নিষ্প্রান, ম্লান ও অর্থহীন করে দিচ্ছে। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে বড় আজলদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় কেরামত আলী স্যার প্রায় সময় কিছু কিচ্ছা (গল্প) বলতেন। স্যার একদিন বলতেছিলেন “কাউয়ায় ধান খাইলরে খেদানির মানুষ নাই, খাওনের সময় আছে মানুষ, কাজের সময় নাই, কাউয়ায় ধান খাইলরে” দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সার্বিক অবস্থার নিধারূন অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপট দেখে কেরামত আলী স্যারের কিচ্ছার কথা এ নিবন্ধের শিরোনাম হিসেবে উল্লেখ করা হলো। গেল মওসুমে দেশের অনেক জায়গায় কৃষক গোল আলুর ভেজাল বীজ বপন করার ফলে শুধু আলুর গাছ দেখা গেলেও গাছে কোন আলু না হওয়াতে কৃষকের সর্বনাশ হয়ে যায়। কৃষকরা এ ব্যাপারে অনেক দেন দরবার করে আলু বীজ বিক্রেতাদের কাছ থেকে বীজের আংশিক মূল্য ফেরত পেলেও সারা বছরের অর্থকারী ফসল আলু ঘরে তুলতে না পারায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখে দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে সুপরিচিত মুন্সীগঞ্জ, বিক্রমপুর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, চরকাউনা, মির্জাপুর, তারাকান্দি, সুখিয়া, হোসেনপুর, ময়মনসিংহের ত্রিশাল, গফরগাঁও, নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জের আলু চাষীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে বিভিন্ন তথ্য, সুত্র ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়।

তদোপরি আগাম বন্যার পানি, পাউবোর অপরিকল্পিত বাঁধ ও প্রতিবেশী দেশের ৫টি ড্যামের পানিতে দেশের হাওর এলাকা প্লাবিত হয়ে বোরো ধানের সমূহ সর্বনাশ করে থাকে। তাছাড়া পরবর্তী সময়ে বোরো ধানে ব্ল্যাক ব্লাষ্ট রোগের প্রকোপে ধানে ছিটা ও কালো হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে কৃষকের উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা এসে বাসা বাঁধে। একদিকে আলুর ষ্টপ পটেটু (ঝঃড়ঢ় ঢ়ড়ঃধঃড় ফরংবধংব) সংক্রামক এবং অপরদিকে হাওরের পানিতে বোরো ফসলের সর্বনাশ ও বোরো ধানের ব্ল্যাক ব্লাষ্ট (ইষধপশ ইষধংঃ) মড়কের ব্যাপারে চাষীদের অবর্ণনীয় দুঃখের শেষ নেই। যদি সময় মতো চাষীরা উন্নত জাতের আলূ বীজ বপন করতে পারতো এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এসব কিছু যেনে যদি যথাসময়ে ভালো বীজ সরবরাহের সুযোগ করে দিতে সক্ষম হতো তবে এই মহা বিপর্যয় থেকে আলু চাষীরা রক্ষা পেলে হয়তো তাদের বিলাপ কাউয়ায় ধান খাওয়ার সুরের সাথে এক হতনা।

কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইনের হাওর, সিলেটের হাওর, সুনামগঞ্জের হাওর, হবিগঞ্জের হাওর সহ দেশের অন্যান্য এলাকার হাওর পাউবোর বাঁধের ভেজাল ও ফাঁক ফোকড়ের কারণে যেমনি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার প্রেক্ষাপট ও হাওর এলাকার জন্য কম বিষাদের নহে। জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তে ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, অবহেলা ও দূর্নীতির খোঁজ পেয়েছে। অন্যান্য এলাকার হাওর রক্ষা বাঁধের দুর্নীতিও তদন্ত করছে দূর্নীতি দমন কমিশন। সুনামগঞ্জের হাওর রক্ষা বাঁধের দুর্নীতির ব্যাপারে দুদক পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার সহ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারীশের কথা জানা যায়। দুদক যে ৭৫ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারীশ করেছে তাদের মধ্যে পাউবোর মহা পরিচালক ছাড়াও ৩ জন অতিরিক্ত মহা পরিচালক, পাউবো সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জের ৪ জন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, ১৩ জন উপসহকারী প্রকৌশলী ও হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত ৫০ জন ঠিকাদারের নাম রয়েছে। এছাড়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নামও এসেছে অনুসন্ধ্যান পর্যায়ে। জানা যায়, দুদকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ দন্ড বিধির ৫১১ ধারা (দুর্নীতি প্রচেষ্টা) ১৯৫৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা (ক্ষমতার অপব্যবহার) ও দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় (পরষ্পর যোগসাজসে) তাদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, হাওর তলিয়ে যাওয়ার পেছনে পাউবোর স্থানীয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই সময় দুদকের একজন মহাপরিচালক (ডিজি) অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধে ভাঙনের বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি প্রতিবেদন চায়। কাদের দুর্নীতির কারণে হাওরের বাঁধ ভেঙে কৃষকের সর্বনাশ হচ্ছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন চাওয়ার পর মন্ত্রণালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কমিটি করার জন্য বলে। এর ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গত বছর এপ্রিলেই দুই সদস্যের কমিটি গঠন এবং ওই কমিটির প্রতিবেদনটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহে দুদকে আসে। কিন্তু তাতে অনিয়ম দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে কৃষকের ফসল হানির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলা হয় বন্যা, আগাম বৃষ্টি ও ইদুঁরে বাঁধ কেটে দেয়ার কারণে হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকে।

সূত্রে আরো জানা যায় ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছর পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। ৩৬টি হাওর রক্ষায় ৪৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেভাবে বাজেটও বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু চলতি অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকার কাজ প্রদর্শন করা হলেও বাঁধ রক্ষা সম্ভব হয়নি। সুনামগঞ্জের বাঁধ রক্ষার মতো অন্যান্য হাওরের বাঁধে কতটুকু কাজ হয়েছে বা হয়নি তা জানা না গেলেও এ ব্যাপারে সম্ভাব্য ফলাফল জানা যাবে বলে সূত্রে জানা যায়। এমনিভাবে সরকারের বিভিন্নস্তরে বিশাল দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় জনমনে দিন দিন যেমনি অস্বস্থি বাড়ছে তেমনি কাউয়ার ধান খাওয়ার সময় খেদানির মানুষ নাই বলে এ উক্তির যথার্থতা যেন বারবার প্রতিফলিত হচ্ছে। ২৬ মে, শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ রংপুরের আঞ্চলিক কাগজে ‘রংপুরে ডিসির স্বাক্ষর জাল করে ৪ শ অস্ত্রের লাইসেন্স’ শিরোনামটি সর্বমহলে বিষ্ময় সৃষ্টি না করেই পারে না। কারণ এ কাজটি কোনমতেই স্বল্প সময়ে হয়নি। এমনিভাবে দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদনে ২০১৬ তে দশ খাতের দুর্নীতি বন্ধে ৬৫ দফা সুপারীশ করা হয়েছে। তাও দেশের মানুষকে কম ভাবিয়ে তোলার কথা নয়। সবার মুখে মুখে আজ একই কথা, একই প্রশ্ন তা হলো শাসক গোষ্ঠির এত বড় বড় কথার ফুলঝুড়ির পর আসলে হচ্ছেটা কী? তা আজ দেশের বড় সমস্যা বলে অনেকেই মনে করছে।

২৫মে বৃহষ্পতিবার দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ও তিন কমিশনার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ব্যাংক বীমাসহ সরকারের ১০ খাতের দুর্নীতি রোধে ৬৫ দফা সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির নিকট হস্তান্তর করা হয়। প্রতিবেদনে শিক্ষা খাতের দুর্নীতি রোধে ১০ দফা, স্বাস্থ্যখাতে ৭, আইনশৃংখলা ব্যবস্থাপনায় ৫, ভূমি ব্যবস্থাপনায় ৯, এনবিআর ৪, হিসাব ও নিরিক্ষা বিভাগ ৩, রাজউক, গণপূর্ত ও সরকারী নির্মাণ কাজে ৬ দফা সুপারিশ করা হয়। তাছাড়া আর্থিক খাতেও ৬ দফা, জনপ্রশাসন খাতে ১০ এবং বিবিধ খাতের দুর্নীতিরোধে ৫ দফা সহ ৬৫ দফা সুপারীশ করা হয়েছে। তাছাড়াও এ সমস্ত সমস্যা সমাধানের জন্য দুদক কিছু পরামর্শ প্রদান করেছে। তা হলো (ক) সচিবালয়ে বিজনেস নিষ্পত্তির পদ্ধতি হিসেবে সনাতনী ফাইল উপস্থানের প্রক্রিয়ার বিলোপ (খ) সপ্তাহ শেষে কোন ফাইল নিষ্পত্তি না হলে এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে কৈফিয়ত তলব, (গ) সরকারী সেবা খাতের দুর্নীতি বন্ধে ‘হেল্প ডেস্ক’ ও ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ কার্যক্রম

চালু, (ঘ) সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড গঠনের মাধ্যমে কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেলের পরিবর্তে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিবকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্তির সুপারিশ করা হয়। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতনের সরকারী অংশ কোথায় যায়, এর লভ্যাংশ কোন খাতে খরচ হচেছ তার জবাব মিলছেনা। জানা যায় একটি প্রভাবশালী চক্র নানা কৌশলে সরকারী অংশের এই টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। বেতন খাত থেকে গত তিন বছরে ৬১৪ কোটি টাকা গোপনে সরিয়ে ব্যাংকে রেখে লভ্যাংশ খেয়ে আসছে ওই চক্রটি। এ সময়ের মধ্যে মুনাফার প্রায় একশ কোটি টাকা লুটপাট করে চক্রের সদস্যরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দা জালে সম্প্রতি ধরা পড়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মাধ্যমে পরিচালিত এমন তুঘলকি কান্ড।

মাউশি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রায়ত্ব চারটি ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে গড়ে উঠেছে এ চক্রটি। এ ব্যাপারে “শিক্ষকদের বেতন যায় কার পেটে জবাব নেই মাউশির” এই শিরোণামে ১৮ মে বৃহষ্পতিবার দৈনিক যুগান্তরে একটি নাতিদীর্ঘ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়ে থাকে। অর্থ মন্ত্রণালয় এই জালিয়াতির অনিয়ম ব্যাখ্যা চেয়েও নাকি জবাব পাচ্ছেনা। অর্থ মন্ত্রণালয় ওই টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরত পাঠানোর কথা বললেও তা নাকি আমলে নিচ্ছেনা মাউশি। নিয়ম অনুযায়ী সরকারী বরাদ্দের টাকা ব্যয় না হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই টাকা জমা থাকার তথ্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা বাধ্যতামূলক। শিক্ষকদের বেতনের টাকা না দিয়েও ৬১৪ কোটি টাকা সরিয়ে রাখার তথ্য অর্থমন্ত্রণালয়কে জানায়নি মাউশি। এমনকি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিপুল অর্থ গোপনের তথ্য অর্থ মন্ত্রনালয়কে জানানো হয়নি বলে মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। টাকার অভাবে নতুন করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিওভূক্ত (সড়হঃযষু ঢ়ধুসবহঃ ড়ৎফবৎ) মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার করা যাচেছনা বলে সূত্র দাবী করে থাকে। ৬১৪ কোটি টাকার প্রতিবছরে মুনাফা আসে ৩০ কোটি টাকা। সাড়ে তিন বছরে যা হয় একশ কোটি টাকা। মূল টাকা ব্যাংকে পড়ে থাকলেও মুনাফার টাকা কোথায় যায় এর যেন হদিস নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারো কাছে। এসব কিছু যেন হ-য-ব-র-ল ও দিকভ্রান্ত সমীকরণের ফসল। তথ্যমতে বেসরকারী বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলিয়ে পাঁচ লক্ষ শিক্ষক কর্মচারী সরকারের এমপিও সুবিধা পেয়ে থাকে। এসব শিক্ষকের বেতন ও ভাতা পরিশোধে মাউশিতে প্রতিমাসে টাকা ছাড় করে অর্থমন্ত্রণালয়। সোনালি, রূপালী, জনতা ও অগ্রণী রাষ্ট্রায়ত্ব এ চার ব্যাংকের মাধ্যমে এ টাকা দেয়া হয়। এমপিওভূক্তদের জন্য সরকার প্রতিমাসে ৯৪০ কোটি ৪৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে থাকে। এ খাতে বছরে খরচ হয় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এই অনিয়ম ওয়ান ইলেভেনের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ধরা পড়ে। তখন জমে থাকা ১০০ কোটি টাকা ফেরতের উদ্যোগও নেয়া হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর পর ফাইল নাকি চাপা পড়ে যায়।

এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের অভিযোগ মাসের নির্ধারিত তারিখে বেতনের সরকারী অংশের টাকা তুলতে গিয়ে যার পর নাই সমস্যা পোহাতে হয়। সমস্যার কথা মাউশি বা শিক্ষা ভবনে জানাতে গেলে সমাধানের বদলে হয়রানি হতে হয়। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গৃহীত নানা উদ্যোগেও দুর্নীতির খাসালত নাকি পাল্টাচ্ছেনা। পদে পদে শিক্ষক হয়রানীও নাকি থামছে না। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধেও নাকি চলছে দূর্নীতি দমন কমিশন এর (দুদক) মামলা । এ প্রসঙ্গে জনৈক শিক্ষকের একটি চিঠি পেয়ে হতভাগ হয়েছি। তিনি লিখেছেন কিশোরগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসের জনৈক ড্রাইভার দীর্ঘদিন যাবত একই অফিসে চাকরির সুবাদে নাকি শিক্ষকদের নিকট কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে নাকি হয়রানী করে যাচ্ছে। শিক্ষকরা নাকি উক্ত ড্রাইভারের ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে নাকি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট হতে কোন কার্যকারী ব্যবস্থা দেখতে পায়নি।

পরিশেষে বলতে হয় আজ অবাধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির ফিরিস্থি ও নো এ্যাকশন (ঘড় ধপঃরড়হ) দেখে বারবার মরহুম কেরামত আলী স্যারের “কাউয়ায় ধান খাইলরে, খেদানির মানুষ নাই, খাওনের সময় আছে মানুষ, কামের সময় নাই, কাউয়ায় ধান খাইলরে” কিচ্ছাটি বারবার শতবার মনে পড়ে।



এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট

 

সাম্প্রতিক