ffght6hদেশে উচ্চ শিক্ষিতরা বেশি বেকারথ এমন তথ্য উৎসাহব্যঞ্জক নয়। কিন্তু বাস্তবে সেটিই আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপের তথ্য অনুযায়ী; দেশে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী বেকারত্বের হার ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় উত্তীর্ণ ১০ দশমিক ১ শতাংশ, উচ্চমাধ্যমিকউত্তীর্ণ ৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেকার। পক্ষান্তরে প্রাথমিক পাস করা যুবকদের মধ্যে বেকারের হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং লেখাপড়া না-করা যুবকদের মধ্যে ২ দশমিক ২ শতাংশ বেকার। এর কারণ কি এই যে, উচ্চ শিক্ষিতদের উপযোগী কাজ নেই? সেটিও বলা যাবে না। গার্মেন্টসহ বেসরকারি খাতে প্রতি বছর ভারত, শ্রীলংকাসহ ব্যাপক জনশক্তি আমদানি করা হচ্ছে। এজন্য তিন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে। প্রতি বছর বাংলাদেশে দক্ষ জনশক্তির ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের যুবকরা কেন এসব ক্ষেত্রে কাজ পাচ্ছে না? আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেই এর জবাব নিহিত।

এখানে যেসব বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পড়ানো হচ্ছে, তার মধ্যে অনেক বিষয়ই চাকরির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই কাজের কথা মাথায় রেখেই বিষয় নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু সে সুযোগ সীমিত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয় নির্ধারণ করে দেয়, কে কোন বিষয়ে পড়বে। এমনও দেখা যায়, যার পড়ার ইচ্ছে ছিল অর্থনীতি, তাকে ভর্তি হতে হচ্ছে বাংলায়। কিংবা পড়ার ইচ্ছে ছিল বাংলায়, তাকে ভর্তি হতে হলো মনোবিজ্ঞানে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর কিছু করার থাকে না। তাই সময়ের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা জরুরি। বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। সর্বোপরি শিক্ষার পাশাপাশি প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা থাকা দরকার, যাতে শিক্ষা শেষে তরুণ-তরুণীরা প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে। এ ধরনের ব্যবস্থা থাকলে জনশক্তি আমদানিতে সুফল আসত। দেশ থেকে এখন বেশিরভাগই অদক্ষ জনশক্তি রফতানি হচ্ছে। প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে তাদেরকে কম বেতনে কাজ করতে হচ্ছে। বলা বাহুল্য, শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে কেরানি হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তারা শিল্প-কারখানায় কাজের ব্যাপারে তেমন উৎসাহী নয়। প্রস্তুত নয় ক্ষেতে-খামারের কাজেও। এমন মানসিকতারও পরিবর্তন আবশ্যক। কাজের চাহিদা বিবেচনায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা জরুরি মনে করি।

সাম্প্রতিক