ershad parimentঢাকা : ২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেট অর্থমন্ত্রী জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট মনে করলেও এতে অনেক অবাস্তব বিষয় রয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় এ কথা বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

এরশাদ বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বাজেট। কিন্তু জনগণের কাছে তা সর্বনিকৃষ্ট বাজেট। আজকে বাজেট পেশ করার পর ব্যবসায়ী, চাকরিজীবি দিনমজুর, রিকশাওয়ালাসহ সকলে মহাআতঙ্কে আছেন। বাজেটে অনেক অবাস্তব বিষয় রয়েছে।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন এ বছর ৭.০৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন সংস্থা প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু তিনি যৌক্তিক কোনো জবাব দিতে পারেন নাই। প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মসংস্থানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। একটি দেশে কর্মসংস্থান ছাড়া প্রকৃত অর্থনীতি এগোতে পারে না।

এরশাদ বলেন, লক্ষ, কোটি টাকা ব্যাংকিং সেক্টর থেকে লোপাট হচ্ছে তাদের বিচার হচ্ছে না। তাদের নাম জনগণ জানতে পারছে না। কেন? তারা কি সরকারের চেয়ে একই শক্তিশালী। সবচেয়ে অন্যান্য ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি ঘটনা। যারা এর সঙ্গে জড়িত তারা চিহ্নিত হলেও তাদের নাম জানতে পারলাম না। এখানো তারা এই সমাজে বসবাস করছে। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা কি হতে পারে। কেন তাদের বিচার হবে না। তাহলে কি সুশাসনের অভাব। অর্থমন্ত্রীও বলতে পারবেন। আমি দাবি করবো যারা ব্যাংক লুটপাট করেছেন তাদের প্রকাশ করুন।

শেয়ার মার্কেটের বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ার বাজার অর্থ লোপাটের প্রাণকেন্দ্র হয়েছে। ২০১০ সালে শেয়ার মার্কেট ধসের পর অনেক বিনিয়োগকারী আত্মহত্যা করেছেন। আশা করেছিলাম প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপ নিবেন। কিন্তু আমরা আশাহত হয়েছি।

শিক্ষাক্ষেত্রে অবক্ষয় চলছে উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে অবক্ষয় চলছে। কোচিং বাণিজ্যের দৌরাত্ব। এই সেক্টরে লুটপাট চলছে। এখন শিক্ষকরা নকল সরবরাহ করে। দেশের পরিবেশ কোন অবস্থায় যেতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ সবাইকে পাস করাতে হবে। জিপিএ দিয়ে প্রকৃত মেধা বোঝা যাচ্ছে। আমি আবার পরীক্ষার ফলাফলে ডিভিশন প্রথা পুনরায় চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

স্বাস্থ্য বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগে ডাক্তারদের কমিশন চলছে। যে কোনো অজুহাতে শুধু মেডিক্যাল টেস্টের দিকে নজর। সকলে শুধু কমিশনের পিছনে ছুটছে। হাসপাতালগুলোতে দালালদের দৌরাত্ম। মেডিটেশনের ওপর কর প্রত্যাহারের জন্য দাবি জানাচ্ছি। অর্থমন্ত্রীও অনেক সময় উত্তেজিত হয়ে যান। উনারও মেডিটেশন করা দরকার আছে।

কৃষি সকল পণ্যের ওপর কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এরশাদ বলেন, কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে আমিও বলবো কৃষিপণ্যের ওপর সকল কর প্রত্যাহার করতে হবে। কৃষক আমাদের প্রাণ। খাদ্যগুদামের প্রকৃত চিত্র বুঝে খাদ্য আমদানি করার উচিত। চালের দাম কমাতে চাল আমদানি করা হোক।

তিনি বলেন, শুধু বিড়ির ওপর কর বাড়বে কেন। সিগারেটে কি নিকোটিন নেই। আমি বিড়ির ওপর ২০ শতাংশ ও সিগারেটের ওপর ১০০ শতাংশ কর আরোপের দাবি করছি।

তিনি বলেন, ২৫ বছর বিমানে উঠি না। বিমান সময়ের সিডিউল নেই। বিমানে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য নিয়ে সমস্যা হয়, এটা মেনে নেওয়া যায় না। বিমান আমাদের গর্ব। আমাদের পতাকা বহন করে। আমাদের পতাকা অপমান করবেন না। আমি বিমানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সাম্প্রতিক