স্টাফ রিপোর্টার: অতিবৃষ্টি ও আগাম বন্যায় এখন সিলেটে প্রায় সোয়া ৩শ’ কিলোমিটার সড়কে ক্ষতি হয়েছে; চলছে যোগাযোগে ভোগান্তি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কের বেশিরভাগই গ্রামীণ জনপদে। যে সড়কগুলো ভেঙে গেলে মেরামত হতে সময় লাগে বছরের পর বছর। দুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী হয় সেসব অঞ্চলের মানুষের। এসব সড়ক কবে নাগাদ মেরামত হবে এ নিয়ে শঙ্কিত থাকেন স্থানীয়রা।
এবার বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে সিলেটে প্রায় সোয়া ৩শ’ কিলোমিটার সড়কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আওতাধীন ২১৬ কিলোমিটার সড়ক। অতিবৃষ্টিতে এসব সড়কের পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বন্যাকবলিত সড়কে হয়েছে বড় বড় গর্ত। একইভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ১০৬ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত। তার মধ্যে বন্যা কবলিত ৬ কিলোমিটার সিলেট ও ফেঞ্চুগঞ্জে। বাকি সড়কগুলো অতিবৃষ্টিতে পিচ ওঠে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এসব সড়কের অনেকটির সংস্কার কাজ হয়েছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে। কিন্তু সংস্কারের পরপরই আবারো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেরামত নিয়ে সংশয়ে আছেন স্থানীয়রা। সরেজমিন দেখা গেছে, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের প্রধান সড়কটি এখনো বন্যাকবলিত। অতি বর্ষণ ও বন্যায় নদী সংলগ্ন সড়কটি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অটোরিকশা ও ইজিবাইকে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হয়েছেন অনেকে।
উপজেলার মাইজগাঁও বাজার থেকে ঘিলাছড়া জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কটি বছরের পর বছর ভাঙা ছিল। গত ২/৩ মাস আগে সড়কের মেরামত কাজ শেষ হয়।
সম্প্রতি বন্যায় সড়কের বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হয়ে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে হাকালুকি পাড়ের পিকনিক স্পট জিরো পয়েন্টের সড়ক। এ সড়কের মতো উপজেলার গুচ্ছগ্রাম চেরাগি সড়কেও ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি সিলেটের বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন সড়কের খানাখন্দ দেখে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তার এ নির্দেশনা গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার উপজেলা কেন্দ্রীক।
যে কারণে অন্য উপজেলাগুলোতে রাস্তার সংস্কার কাজ যথাসময়ে হবে কিনা এ নিয়ে মুখোমুখি হন এলজিইডি ও সওজ সিলেটের প্রকৌশলীরা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত বলেন, সিলেট জেলায় সওজের ৫৪৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ১০৬ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৬ কিলোমিটার বন্যায় এবং বাকিটা অতিবৃষ্টিতে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যার পানি নামলেই সেসব সড়কে কাজ শুরু হবে। বিভাগীয়, টেন্ডার ও লংটার্ম মেরামত প্রক্রিয়ার আওতায় কাজ করা হবে বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম মহসীন বলেন, ২ হাজার ২শ’ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ২শ’ ১৬ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে সর্বাধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিলেটের বিয়ানীবাজার ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সড়কগুলো। মানুষের ভোগান্তি লাঘবে বৃষ্টি ও বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
< Prev | Next > |
---|