মোমিন মেহেদী
২০০১ সালে যেভাবে সরাসরি দেখা হয়েছিলো, সেভাবে আরেকবার দেখা হলে সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহামুদের ফুফা শফী মৌলভীকে বলতাম- ‘বাংলাদেশে অনেক সুবিধাবাদী দেখেছি, আমার দেখা শ্রেষ্ঠ সুবিধাবাদী হলেন আপনি। কেননা, আপনি আপনার ভাষ্য অনুযায়ী ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নাস্তিক সরকার’কে উৎখাতের জন্য খালেদা জিয়ার অর্থ-জনবল ও কৌশলে শক্তিশালী হয়ে ৫ মে ২০১৩ তে শাপলা চত্বরে হাজার হাজার কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে ক্লাশ বন্ধ করিয়ে এনে সমাবেশ করেছিলেন। অথচ সেই আপনি সেই ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নাস্তিক সরকার’কে উৎখাতের পরিবর্তে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করেছেন, সরকারের স্থায়িত্ব চেয়েছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজেদের সকল ভুলত্রুটিকে শুদ্ধ হিসেবে প্রমাণ করতে বদ্ধ পরিকর। তাছাড়া তিনি পারেনও বটে। একই সাথে স্ববিরোধীও তিনি। ‘কাউয়া’ বলে যাদেরকে লীগ থেকে বের করে দেয়ার মত সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন, সেই তিনি-ই ‘কাউয়া’দের কা কা ডাক ছাড়া ঘুম থেকে জাগেন না। শুধু এখানেই শেষ নয়; কওমী ‘কাউয়া’ দেরকে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে বসিয়ে ৫ মে ২০১৩ সালের ঘটনার জন্য তওবা পরিয়ে, দীর্ঘায়ুর জন্য দোয়া করিয়ে ‘দাওরা’ কে মাস্টার্স-এর স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিলেন, তখন তিনি বললেন, বিএনপি ও খালেদা জিয়া ধর্ম ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বিশ্বস্থ পৃষ্ঠপোষক। ইতিহাস সেটারই প্রমাণ দেয়। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, হেফাজত ইসলামের সাথে আওয়ামী লীগের কোনো চুক্তি কিংবা জোট হয়নি। অনেকে কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির সাথে হেফাজতের স্বীকৃতিকে গুলিয়ে ফেলছেন। এটা ঠিক নয়। স্বীকৃতি দেয়ার অর্থ হলো, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল অবকাঠামোর মধ্যে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির পর আল্লামা শফি হুজুর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান নেয়াটা লাভ নয় কি? একই প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কওমি মাদ্রাসার প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে থাকে। তাই আমরা কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়েছি। কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো আধুনিকায়ন এবং নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মতে, প্রগতির যে পথ সেটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আর বাস্তবতাই হচ্ছে প্রগতিশীলতা। বাস্তবতাকে বাদ দিয়ে কেউ প্রগতিশীল হতে পারে না।
প্রগতিশীলতার নাম যদি ধর্ম ব্যবসায়িদেরকে পৃষ্টপোষকতা প্রদান হয়; দলীয় স্বার্থ রক্ষায় অন্ধকারকে আলো বলার চেষ্টা করা হয়; বিবাদ সৃষ্টিকারীদেরকে কাছে টানা হয়; তাহলে সেই প্রগতিশীলতা চায় না নতুন প্রজন্ম। তারা জানে যে, কওমী মানেই উদ্ধত, অভিশপ্ত ও জালিম: কোন মুসলমানই ‘কওমী’ হতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তথাকথিত কওমী তথা ওহাবী, দেশদ্রোহী, জাতিদ্রোহী ও নবীদ্রোহীদের সর্বশেষ সনদকে ‘মাস্টার্সের মান’ দেয়ার মধ্য দিয়ে একদিকে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির জঙ্গীদেরকে মদদ দিলেন নিজেদের মত করে কাজ করে যাওয়ার জন্য; অন্যদিকে কালো জগতের বাসিন্দা তথাকথিত পীর-মুরিদ-মুফতি আর আল্লামাদের ‘তেতুল দর্শন’ কে গতিশীল করে নারী নেতৃত্ব; নারীর উত্তরণকে ব্যহত করে রাজনীতির নামে অপরাজনীতি ধর্ম ব্যবসায়ীদেরকে এগিয়ে যেতে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তথাকথিত এই কওমীদের সকল সনদের স্বীকৃতি চাই এবং তাদের সকল মাদ্রাসারও স্বীকৃতি চাই। কিন্তু আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, জঙ্গীদের উৎস এই তথাকথিত কওমীরা চায়- শুধু তাদের শেষ শিক্ষা সনদের মান। তারা যেমন তাদের সকল সনদের মান ও স্বীকৃতি চায় না, তেমনি তাদের কোন মাদ্রাসার মান এবং স্বীকৃতিও চায়। আর এই না চাওয়ার মাঝেই আছে- 'শুভঙ্করের ফাঁকি'। ওহাবী-কওমীদের দওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স এর সমমান দেয়া নিয়ম বহির্ভূত, বৈষম্যমূলক, বেআইনি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, আত্মঘাতি এবং চূড়ান্তভাবে 'বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থী'। যা না শোধরালে জাতির জন্য দীর্ঘস্থায়ী একটি ক্ষত সৃষ্টি হবে, যার নেতিবাচক প্রভাব দেশ ও জাতির ওপর অবশ্যই পড়বে। আমরা সব বিষয়েই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করবো। যদিও ১১ এপ্রিলের ঘোষণাটির আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ তারিখ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান যে, 'যথাযথ পাঠ্যপুস্তক পড়িয়েই মান দেয়া হবে'। কথা আছে সেখানেও।
কওমীরা নিজেরাও জানেন না যে কেন তারা নিজেদেরকে ‘কওমী’ হিসেবে প্রচার করছেন। বাংলাদেশের সকল কওমী মাদ্রাসা ‘দেওবন্দী ধাঁচে' গড়া। আর দেওবন্দী মানেই ওহাবী। বাংলাদেশের জনমানুষ এই কওমী মাদ্রাসাকে 'ওহাবী মাদ্রাসা' বা 'খারেজী মাদ্রাসা' হিসেবেই চেনে এবং জানে। মাত্র একযুগ আগে থেকেই এই ওহাবী মাদ্রাসাগুলো 'কওমী মাদ্রাসা' হিসেবে পরিচিত হতে থাকে এবং তারা নিজেদেরকে 'কওমী' হিসেবে পরিচিত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এর আগে তারা নিজেদেরকে 'দেওবন্দী' হিসেবেই পরিচিত হতে গর্ববোধ করতেন। কিন্তু হঠাৎ করে কেন তারা নিজেদেরকে ‘কওমী’ হিসেবে পরিচিত করতে লাগলেন- গবেষনার বিষয় সেটাই। খোদ ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসাকেও কওমী মাদ্রাসা বলা হয় না। দেওবন্দী ধাঁচের কোন মাদ্রাসাকে ভারত বা পাকিস্তানের কোথাও 'কওমী' মাদ্রাসা বলা হয় না। মজার ব্যাপার কি জানেন? বাংলাদেশের কোন 'কওমী' মাদ্রাসার নামের সাথেও 'কওমী' শব্দটি যুক্ত নেই। কোন ওহাবী-কওমী বন্ধু তাদের কোন মাদ্রাসার নাম 'কওমী' দেখাতে পারবেন না। সকল ওহাবী-কওমী বন্ধুদের প্রতি এটি আমার চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকলো। ১৫-৫৭ হাজার কওমী মাদ্রাসার (যার সঠিক পরিসংখ্যান না সরকারের কাছে আছে, না কওমীদের কাছে) একটি মাদ্রাসার নামের সাথেও ‘কওমী’ শব্দটি যুক্ত না থাকাটা একথাই প্রমাণ করে যে, তাদের গোড়াতেই গলদ আছে। এমনকি ‘দেওবন্দী' নামেও কোন কওমী মাদ্রাসা নেই। অথচ তার বিপরীতে আলিয়া মাদ্রাসাগুলোর দিকে দেখুন- আপনি শত শত আলিয়া মাদ্রাসা পাবেন। যেমন- ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা, সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা। কোন কোন মাদ্রাসার সাথে 'সুন্নী' শব্দটিও উল্লেখ আছে। যেমন- জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, ছারছিনা দারুস সুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা। কোন কোন মাদ্রাসার সাথে আবার আলিয়ার পরিবর্তে ইদানিং 'কামিল' শব্দটিও ব্যবহৃরিত হচ্ছে। ঢাকা মোহাম্মদপূর কাদেরিয়া তৈয়বিয়া কামিল মাদ্রাসা, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা ইত্যাদি।
তথাকথিত ওহাবী দেওবন্দী আলেমগণ কেন নিজেদের আসল পরিচয় না দিয়ে 'কওমী' হিসেবে পরিচিত হতে চাচ্ছেন- সে সম্পর্কে এককথায় বলতে গেলে বলতে হয়, তা হলো- ‘জনমানুষকে ধোঁকা দেয়া', আর কিছু না। তারা ইসলামের আড়ালে কুখ্যাত ওহাবীবাদ প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করছেন। ওহাবীবাদ কী- সে সম্পর্কে আমি আরেকটি পর্বে আলোচনা করবো। এখানে শুধু এটুকু বলে রাখি- 'ওহাবীবাদ' হলো ইসলামের প্রাথমিক যুগে সৃষ্ট সর্বপ্রথম বাতিল ফিরকার একটি- 'খারেজী' মতবাদের আধুনিক সংস্করণ। যা কুখ্যাত ইবনে আবদুল ওহাব নজদীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পায়। সরলমনা সাধাসিধে মুসলমানদের ধরে ধরে মুশরিক আখ্যা দেওয়াই তাদের কাজ। এ হিসেবে বলা যায়- প্রতিটি ওহাবী-কওমী মাদ্রাসা মানেই মুসলমানদেরকে মুশরিক বানানোর একেকটি ফ্যাক্টরি। অনুমোদনহীন এই বিশাল সংখ্যক ফ্যাক্টরির প্রভাবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জনমানুষ ওহাবীবাদের দিকে ঝুঁকছে। তাদের লেখাপড়ার মান কতো নিন্ম পর্যায়ের, তা জাতির সামনে ওঠে এসেছে- যখন এরশাদ আমলে বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পটিয়ার ওহাবী মাদ্রাসা পরিদর্শনে যান, তখনই। তিনি বিশাল পটিয়া মাদ্রাসার বিভিন্ন ক্লাস পরিদর্শন কালে যখন তাদের পাঠ্য বই নিয়েই ওহাবী কওমীদের প্রশ্ন করেছিলেন, তখন ছাত্র-শিক্ষক কেউই তাঁর কোন প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারেননি। তিনি তাদেরকে তিরষ্কার করে বলেছিলেন- "যে কিতাব আপনারা পড়াচ্ছেন- সে সম্পর্কে তো অন্ততঃ আপনাদের জ্ঞান থাকা চাই। জাতির সাথে এই ধাপ্পাবাজি কেন করছেন"? এতে করে ওহাবী কওমী ছাত্র-শিক্ষকরা লা জবাব হয়ে যান। পরিদর্শন শেষে আসার সময় তারা তাঁর সামনে পরিদর্শন বই মেলে ধরলে তিনি প্রাঞ্জল আরবীতে ঝরঝরে অক্ষরে লিখে দিলেন- 'মাদরাতুন আলিয়াতুন খালিয়াতুন আনিল ইলমি ওয়াল হুদা' অর্থাৎ 'এটা এমন এক মাদ্রাসা- যার সুউচ্চ বিল্ডিং আছে বটে, কিন্তু ইলম ও হেদায়াত থেকে পরিপূর্ণ খালি বা যোজন যোজন দূরে।' পটিয়া ওহাবী কওমী মাদ্রাসার যদি এই হাল হয়, তাহলে বুঝতেই পারছেন- কওমীদের অন্যান্য মাদ্রাসাগুলোর অবস্থা কী? তাহলে এই ওহাবী খারেজীরা জাতির কাছ থেকে কী লুকাতে চান? কেন তারা সরকারি নজরদারির বাইরে থাকতে চান? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, তারা যে ওহাবী সেটাই লুকাতে চায়। ওহাবী-কওমী মাদ্রাসাগুলো যে 'জঙ্গিবাদের আঁতুড়ঘর' সেটাই লুকাতে চান। আর তাদের ওহাবীবাদ লুকাতে গিয়েই এই 'কওমী' শব্দটি তারা আমদানি করেছেস। কিন্তু তারা নিজেদের জন্য 'কওমী' শব্দটি নির্বাচন করে নিজেরা নিজেদের এমন সর্বনাশটি করেছেন- তা কেউ কখনো ভেবেও দেখেন নি। 'কওম' মানে গোত্র এবং সম্প্রদায়। পবিত্র কোরআনে 'কওম' শব্দটি সরাসরি এবং সর্বনাম ও অব্যয়যুক্ত হয়ে সর্বমোট ৩৫২ বার এসেছে। যেমন- قوم ، قومًا ، قومنا ، قومي، قومهم ، قومك ، قومه ، القوم ، لقومه ، لقوم তবে কোন সর্বনাম এবং অব্যয় ছাড়া সরাসরি এসেছে ২০৬ বার। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো- আল্লাহ যতোবারই এই 'কওম' শব্দটি ব্যবহার করছেন, একবারও দুনিয়াতে মুমিন-মুসলমানের পরিচিতি হিসেবে ব্যবহার করেননি! বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই 'কওম' শব্দটি ব্যবহার হয়েছে কাফিরদের জন্য, জালিমদের জন্য, মুনাফিকদের জন্য, ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য, অপরাধীদের জন্য, ফাসিকদের জন্য, উদ্ধতদের জন্য এবং আল্লাহ ও নবীদের অবাধ্যতাকারীদের জন্য- القوم الكافرون-القوم الظالمون-القوم الفاسقون-القوم الخاسرون-القوم المجرمون
নবীদের সাথে সম্পর্কিত ভাবেও 'কওম' শব্দটি এসেছে। যেমন কওমে নূহ, কওমে আ'দ, কওমে ছামুদ এবং কওমে লূত ইত্যাদি। এই শেষোক্ত কওমে লুতের কাজ কারবার মানে 'লাওয়াতাত' তথা বলাৎকার ওহাবী- কওমী মাদ্রাসাসমূহে অঘোষিতভাবে চলছে এবং তা প্রমাণিত সত্য। কিন্তু কোরআনের কোথাও আপনি প্রিয়নবী হযরত রাসূলে করীম (দরুদ) এর সাথে 'কওম' শব্দটির ব্যবহার দেখাতে পারবেন না। পৃথিবীর কেউই দেখাতে পারবে না- 'কওমে মুহাম্মদ' বা কওমে আহমদ, বা কওমুর রাসূল বা কওমুন নবী- এ জাতীয় শব্দ সম্ভার। এ থেকে কী প্রমাণিত হয়? প্রমাণিত হয়- বাংলাদেশের তথাকথিত এই কওমীরা জালিম, এই কওমীরা উদ্ধত, এই কওমীরা মুনাফিক, এই কওমীরাই অপরাধী এবং আখেরে এই কওমীরাই ক্ষতিগ্রস্থ। এই কওমীরা কিছুদিন এরশাদ সাহেবের বগলতলে, তো কিছুদিন ম্যাডাম জিয়ার আচলতলে আবার তাদের দেখবেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদতলে। হাদিসে তাদের কথা বলা আছে ঠিক এভাবে- 'লা ইলা হাউলায়ি ওয়ালা ইলা হাউলায়ি'। এই সকল ফেৎনা সৃষ্টিকারীদের জন্য নতুন প্রজন্মের পক্ষ থেকে ক্রমশ সাহসের সাথে প্রতিবাদের মশাল জ্বলে উঠবে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রতি অনুরাগী; কিন্তু তারা ধর্মান্ধ নয়। একদিকে তারা রাজনীতির নামে অপরাজনীতির চালিকাশক্তি জামাত-শিবির-যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গী-পীর-মুরিদী-ধর্মব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্ত অবস্থান নির্মাণ করছে; অন্যদিকে স্বাধীনতা চেতনা ব্যবসায়ি-সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ-ধর্ষক-খুনী-গুমকারী-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দিন দিন নির্মাণ করছে ছাত্র-যুব-জনতা-আবাল-বৃদ্ধ বণিতার ঐক্যবদ্ধতা। যেখানে ন্যায় বিচার থাকবে; থাকবে ইসলামসহ সকল ধর্মের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা।
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নেই; আছে যার যার ধর্ম পালনে নিবেদিত ত্যাগ। থাকবে না নির্মম মৃত্যুর ঘণঘটা। যেভাবে বিভিন্ন সময় আমরা হেফাজতে ইসলামের তথাকথিত কর্মীদের যুদ্ধ প্রস্তুতি দেখেছি; বিশেষ করে ৫ মে ২০১৩ ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকারময় দিন ও রাতটির কথা কোনদিনই ভুলবে না বাঙালি জাতি এবং বিশ্ব চোখ। ভুলবে না ‘কুখ্যাত রাজাকার সাঈদী’ কে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার বিভাগের মূল্য হ্রাস এবং স্বাধীনতা বিরোধীচক্রের ‘চাঁদে সাঈদী’ প্রকল্পের কথাও।
সর্বোপরী রাজনীতিকে ক্ষমতায় আসার আর থাকার রক্ষা কবচ হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়ে অধর্মকে ধর্ম; বকধার্মিককে ধার্মিক হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে দেখতে চাই না; চাই প্রকৃত ধর্মানুসারীদের নিবেদিত থাকুক কালোহীন আলোকিত সমাজ সমাজ-জীবনের অঙ্গীকারকারী সরকার; থাকুক কালোর কুশলীমুক্ত সত্যিকারের প্রত্যয়-প্রত্যাশা; সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের-এর প্রকৃত দেশ-স্বাধীনতা ও ধর্মপ্রিয়তায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ মহানবী হযরত মুহম্মদ সা.-এর নির্দেশনায় আলোর পথে ভালোর পথে...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি
< Prev | Next > |
---|