motamotমীর আব্দুল আলীম

রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইনটি’্র হোটেলে দুই ছাত্রী আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনা হৈ চৈ পরে গেলো দেশে। আমাদের দেশে এমনই হয়। কোন কিছু ঘটলে সজাগ হই আমরা, আর তা নিয়ে হম্বি-তম্বি, তার পর চুপসে যাওয়া বেলুনের মত সব শেষ..। বাঙ্গালিতো এমনই ভোলারাম। সব ভুলে যায় ক’দিনর মাথায়। তারপর চুপেচাপে পাড় পেয়ে যায় অপরাধীরা। আইনের ফাঁকফোঁকোর গলিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে আবার বীরদর্পে চলা শুরু করে, অপকর্ম করা তার কাছে আরও সহজ হয়। এইতো হচ্ছে দেশে; হবেও। যেখানে বিচারহীন সাংস্কৃতির চর্চা আছে সেখানে এমনটাতো হওয়ারই কথা। রাজধানীর বনানীর ঘটনায়ও তার বাতিক্্রম হবে না। ধর্ষকরা ধরা পরেছে, সাথে ধর্ষকদের গাড়িও পাকড়াও করা হয়েছে। কর্মচারি, চাকর-বাকরও ধরা হবে। কেউ ছাড় পাবে না। দেশের মানুষ তাতে খুশিতে গদগদ হবে; সব ভুলে যাবে একদিন। বলেছিনা বাঙ্গলি ভোলারাম, ভুলে যায় সব। এক্ষেত্রেও তাই হবে। তার পর? পাইক, পেয়াদা চাকর-বাকর, গাড়ি-ঘোড়াসহ ছাড় পাবেন ধর্ষক। এসব কারনেই দেশে ধর্ষণ বাড়ছে।

দেশে প্রতিদিন গড়ে ১৮ বছরের কম বয়সী এক দশমিক সাত শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সম্প্রতি কালের এমন জরিপই বলে দেয়, দেশে ১৮ উর্দ্ধ নারী ধরর্ষণ আর নির্যাতনের পরিমান কত। সমাজে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। নিত্যই ব্যভিচার ও ধর্ষণকামিতার ঘটনা ঘটছে। রোধ হচ্ছে না। যৌন নির্যাতন করছে কলেজ শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ডাক্তার, কর্মচারি, পুলিশ, আত্মীয়, চাচা-মামা-খালু, দুলাভাই, আমলা, ধনীর দুলাল। কেউ বাদ যাচ্ছে না। ধর্ষিত হচ্ছে ছাত্রী, শিশু, যুবতী,আয়া, বুয়া, গৃহবধু। রাস্তা ঘাটে, রেস্তোরায়, চলন্ত বাসে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে, গৃহে ঘটছে এই পৈচাশিক ঘটনা। কোথাও আজ নারীরা নিরাপদ নয়। আমাদের নরী, শিশুরা যৌন নির্যাতন এমনকি ধর্ষনের পর খুন হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে থাকছে না বয়স, স্থান, কাল, পাত্রের ভেদ। দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ব্যভিচারের চূড়াান্তÑপ্রকাশ্য ধর্ষণকামিতা। রাত-বিরাতে নয় শুধু, দিনদুপুরে প্রকাশ্য ধষর্ণের ঘটনাও ঘটছে। শুধু ধর্ষণই নয়, রীতিমতো গণধর্ষণ হচ্ছে। অপসংস্কৃতি আর ভিনদেশীসংস্কিৃতির আগ্রাসন আমাদের সমাজকে কতটা ক্ষতবিক্ষত করছে তা হালআমলের ধর্ষণের চিত্র দেখলেই বেশ টের পাওয়া যায়। বাসের ভেতরে ধর্ষিত হচ্ছে মেয়েরা,শিক্ষাঙ্গনে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, এমপির কথিত এপিএসর দ্বারাও এদেশে ধর্ষিত হচ্ছে যুবতী। এই হলো বাস্তবতা। তবে এটি নতুন কোন বিষয় তা নয়; বলা যায় আমাদের সমাজ বাস্তবতার এক করুন চিত্র। কিছু মানুষরূপী নরপশু সভ্যতার ভাবধারাকে পাল্টে দিতে হাযেনার নখ মেলে বসেছে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না বললেই চলে। আর শাস্তি না হওয়ার পরিণতিতে বাংলাদেশে ধর্ষণ, নির্যাতন, অতঃপর হত্যার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। নারী ধর্ষণের পাশাপাশি ইদানীং শিশু ধর্ষণ

এমনকি গণধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। একেকটি ঘটনা ঘটার পর কিছুদিন মিছিল, মিটিং, আন্দোলন, প্রতিবাদসভা হয়। দেশ স্রব হয়। কিচু দিন পরই সব থেমে যায়। থেমে যায় প্রতিবাদের ঝড়। কিন্তু থামে না শুধু নির্যাতিত নারীর কান্না। সম্প্রতিকালের গুলশানের গণধর্ষণের ঘটনাটিও একদিন হয়তো টাকার চাপে ধমকে যাবে। ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয় স্পষ্ট দিক হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত ব্যর্থতা। বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রশ্রয় পেলে এ ধরনের অপরাধতো ফেঁপে উঠবেই।
দেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা বেড়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের অপরাধ বাড়ার মূল কারন। ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয় স্পষ্ট দিক হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত ব্যর্থতা। হাল সময়ের বনানীতে ঘটে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীও ঘটনাই তার জলন্ত প্রমান। এ ঘটনাটিও ধামাচাপা পড়ার উপক্রম হয়েছিল। বীরের বেশেই ঘুরছিল ধর্ষকরা। ধর্ষকরা ধনীর দুলাল হওয়ায় সব কিছু যেন পানির মতো হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু মিডিয়া এবং দেশবাসী সরব হওয়ায় তা হয়নি। অপরাধীরা ধরা পরেছে। এমন হবে কেন? এমন প্রশ্রয়ে দেশে ধর্ষণ বাড়বে এটাইতো স্বাভাবিক। শুরুতেই রাজধানীর বনানীর চার তারকা ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের নিষ্পৃহতার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার মামলা গ্রহণে পুলিশের গড়িমসির বিষয়টি মিডিয়ায় এসেছে। গত ২৮ মার্চ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়–য়া দুই ছাত্রীকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে তাদের দু’জনকে আলাদা আলাদা কক্ষে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণ করা হয়। শুধু ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও চিত্রে ধারণ করা হয়। ভিকটিমরা তাদের ভয়ভীতি দেখালে তারা পরিবারের সাথে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে বনানী থানায় মামলা করতে যায়। মামলা গ্রহণে পুলিশ প্রথমে টালবাহানা করে এমনকি ওই ভিকটিমদের অপরাধী প্রমাণের চেষ্টা করে। তাদের চরিত্র খারাপ বলে প্রমাণের চেষ্টা করে। মেডিকেল টেস্টের নামে থানায় আটকে রাখা হয়। অপরাধীরা ধণাঢ্য এবং প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ায় অনেকের মনেই যথেষ্ট সন্দেহ দানা বাঁধে যে, অতীতের কোন কোন অপরাধ ঘটনার মতোই এই ধর্ষণ ঘটনাও ধামাচাপা পড়ে যাবে। কিন্তু ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করা এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার চাপে একটা পর্যায়ে মামলা হয়। পুলিশ আসামীদের আটক করতে গড়িমসি করে। মিডিয়া সোচ্চার হয়, মিডিয়া জানায় আসামীরা সিলেটে আছে। একটা পর্যায়ে শেষ পর্যন্ত সিলেটে দুই ধর্ষককে আটক করে পুলিশ। যে কোন অপরাধের মামলায় আসামি গ্রেফতার হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে এটাই আইনের বিধান। কিন্তু ঘটনা ঘটার পর মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করে, মানুষ রাস্তায় নেমে দাবি জানিয়ে তারপর পুলিশ তৎপর হবে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রশ্ন হলো, যারা বনানী ধষর্ণ মামলা নিয়ে নয়-ছয় করলো; যারা এতো দিন আপন জুয়েলাসে'র সকল অপকর্ম ঢেকে রেখেছিল; যারা বনানীর চার তারকা হোটেল ‘দ্য রেইনট্রি’ অবৈধ ভাবে কারবার চলতে সহায়তা করলো এরা কেন আইনের আওতায় আসবে না? বনানীর ঘটনায় সকল ধর্ষক, ধর্ষকদের বাঁচাতে যারা সহযোগীতা করেছেন তাদের, যারা ‘দ্য রেইনট্রি’ অনৈতিক কাজ এযাবৎ ঢকে রাখলো তাদেও এবং আপন জুয়েলার্সেও চোরাচালান, ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকিতে যারা দীর্ঘদিন সহযোগীতা করেছেন তাদের সকলকেই আইনের আওতান আনা হউক। ধর্ষকরা যেমন অপরাধ করেছে এরাও নানা কারনে অপরাধী। এদেরও যেন শাস্তি হয়।

প্রশ্ন হলো, দেশে এত ধর্ষণ হচ্ছে কেন? ধর্ষণ রোধের উপায় কি? এ প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলেন- ভাল মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয় না ; পোশাকের সমস্যার কারনে মেয়েরা ধর্ষিত হয়। অনেকে আবার বলেন বেহায়াপনা করে স্বল্প কাপড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ালে ধর্ষণ হবে না তো কি হবে? আর কোন আলেম বলবেন- ‘পর্দা প্রথায় ফিরে আসলে ধর্ষণ আর হবে না।’ আবার অনেকে বলবেন- ‘কঠোর শাস্তি দিলে ধর্ষন কমবে।’ আমি এসব কোনটার পক্ষেই নই। সেই মক্কা-মদিনায়র আরব দেশে পর্দা মানা হয় সেখানেও তো ভুরি ভুরি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। তাদের শাস্তি প্রকাশ্য শিরচ্ছেদ। কৈ সেখানেও তো ধর্ষণ বšধ হচ্ছে না। আমাদের দেশ থেকে যেসব অসহায় নারী আরব দেশে যান তাদের আনেকেইতো দেশে াক্ষত ফিওে আসতে পারেন না। তারা কোননা কোন ভাবে নারী নির্যাতনের শিকার হনই। আমাদেও দেশের নারী শ্রমিকরা আরব দেশে গিয়ে পর্দায় থেকেও কেন যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন? যৌন নির্যাতন বন্ধে আগে মানুষিকতা বদলাতে হবে। নারী দেখলেই কেন ধর্ষণ করতে হবে? সব দোষ নারীর? সব দোষ পাশাকের? এমন মানোষিকতা কেন আমাদের। ধর্মে নারীকে পর্দা করতে বললেও পুরুষদেরও চোখ অবনত রাখতে বলা বয়েছে। তবে শুধু নারীর দোষ কেন? নারীর রুপ যৌবন পুরুষকে মোহিত করবে সেটাই স্বাভাবিক। তাই বলে তার উপর পশুর মতো ঝাপিয়ে হতে হবে কেন? ধর্ষণ কমাতে হলে আগে পুরুষের মাঝে মানুবিক গুণাবলী জাগ্রত করতে হবে। ধর্ষণ রোধে আমাদের সচেতন হতে হবে । অবাধ মেশামেশার সুযোগ, লোভ-লালসা-নেশা, উচ্চাভিলাষ, পর্নো সংস্কৃতির নামে অশ্ল¬ীল নাচ-গান, যৌন সুড়সুড়িমূলক বই-ম্যাগাজিন, অশ্লির নাটক-সিনেমা ইত্যাদি কামোত্তেজনা মানুষকে প্রবলভাবে ব্যভিচারে প্ররোচিত কওে তা বর্জন করতে হবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। সময় মত বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষা ও যৌন শিক্ষার গ্রহন করতে হবে। বাজে সঙ্গ ও নেশা বর্জন করতে হবে। পাশাপাশি নারীকেও শালিন হতে হবে। যৌন উত্তেজক পোষাক বর্জন করতে হবে। প্রবল কামোত্তেজনা মানুষকে পশুতুল্য করে ফেলে। ব্যাপকভাবে কামোত্তেজনা সৃষ্টিকারী উপকরণগুলোর কাছাকাছি চলে গেলে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের আর কোনো উপায়ই থাকে না।

কি আছে ধর্ষন আইনে? ধর্ষণ আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে অনেকেই, বিশেষকরে নারী সংস্থাগুলি আদৌ সন্তুষ্ট নয়। এই আইনে পুরুষাঙ্গ স্ত্রী-যৌনাঙ্গের ভেতরে প্রবেশ না করলে সেটি ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে না। অথচ বহু ভাবেই পুরুষ নারীর ওপর যৌন-অত্যাচার (ংবীঁধষ ধংংধঁষঃ) করতে পরে - দুর্ভাগ্যবশতঃ ধর্ষণ আইনের আওতায় সেগুলি পড়বে না। ধর্ষণ (জধঢ়ব) আইনে (চবহধষ ঈড়ফব) একজন পুরুষ তখনই একটি নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে ধরা হবে, যখন দুজনের যৌন-সংসর্গ ঘটছে: (১) সেই নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে (২) সেই নারীর সন্মতি ছাড়া (৩) সেই নারীর সন্মতি নিয়ে, কিন্তু সেই সন্মতি আদায় করা হয়েছে তাকে বা তার প্রিয়জনকে হত্যা বা আঘাত করা হবে বলে ভয় দেখিয়ে। (৪) নারীটি সন্মতি দিয়েছে এই বিশ্বাসে যে পুরুষটি তার স্বামী, যদিও পুরুষটি জানে যে সে তার স্বামী নয়, (৫) নারীটি যখন সন্মতি দিয়েছে তখন সে প্রকৃতিস্থ ছিলো না, অথবা পুরুষটি বা অন্য কারো দেওয়া হতবুদ্ধিকর বা বাজে কোনো বস্তু খেয়ে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় ছিলো - যার ফলে এই সন্মতির দানের পরিণাম বোঝার ক্ষমতা তার ছিলো না, (৬) নারীটির সন্মতি থাকুক বা না থাকুক - তার বয়স ১৬ বছরের কম। এ ব্যাপারে দুটি ব্যতিক্রম আছে: (ক) স্বামী ও স্ত্রীর যৌন-মিলনকে কোনো ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বলে ধরা হবে না, যদি না স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের কম হয়, অথবা আদালতের নির্দেশে স্বামী স্ত্রী আলাদা ভাবে থাকে। (খ) নারীর উপর অশালীন আক্রমণ (ওহফবপবহঃ ধংংধঁষ) ধর্ষণের চেষ্টা বলে ধরা হবে না, যদি না আদালত মনে করে যে অভিযুক্ত পুরুষটি সব রকম বাধা পাওয়া সত্বেও সর্বক্ষণই নিজের কাম-চরিতার্থ করার জন্য সচেষ্ট ছিলো। আইন যাই থাকুক না কেন আমাদের সমাজের অতি-রক্ষণশীলতা এবং পারিবারিক সমস্যাকে গোপন রাখার চেষ্টা ধর্ষণকারীদের শাস্তি দেবার ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়। যৌননির্যাতন তথা ব্যভিচার সর্বযুগে সর্বধর্মমতে নিকৃষ্টতম পাপাচার। তন্মধ্যে মুসলিম ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের বিভিন্ন সূরার বিভিন্ন আয়াতে মহান আল¬াহ ব্যভিচার সম্পর্কিত পাপের ভয়াবহতা ও এর কঠিন পরিণতিসম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে মানবজাতিকে সাবধান হতে বলেছেন। মহান আল¬াহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের ধারেকাছেও যেও না, কারণ এটা একটা অশ্লীল এবং জঘন্য পন্থা।’ এ অপরাধ কোন দেশে কোন যুগেই বন্ধ ছিল না। এখনো নেই। কোন অপরাধ কখনই নিঃশেষ করা যায় না কিন্তু নিয়ন্ত্রন করা যায় । যে কোন মূল্যে নিয়ন্ত্র করতে হবে। আমরা পুরুষরা (সবাই নন) নারীকে মানুষের মর্যাদা দেইনি কখনই । নারীকে বানিয়েছি ভোগের বস্তু । এ মানুষিকতা দুর করতে হবে।

যৌন হয়রানি শুধু নারী, শিশুর বিরুদ্ধে নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম অপরাধ। বিশ্বের যেসব দেশে ধর্ষণ বাড়ছে এশিয়ার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশে ধর্ষণের অপরাধ বেশি হয়ে থাকে। খুন, ধর্ষন আজকাল এই আধুনিক পৃথিবীর নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা হলেও আমাদের দেশে এর মাত্রা যেন সব বিচিত্রতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞকদের মতে, ধর্ষণের এই ব্যাপকতার পিছনের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, ইসলামী মূলবোধ মেনে না চলা এবং অপরাধীর শাস্তিনা পাওয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ততা ও তাদের তৎপরতাও দায়ী। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যথেষ্ট শক্তিশালী আইন থাকা সত্ত্বেও নির্যাতনকারীরা বিভিন্ন উপায়ে পার পেয়ে যায়। বাংলাদেশের আইন ভারতের চেয়েও শক্তিশালী। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)-এর ৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে তবে সে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবে। একই আইনের ৯ (২) ধারায় আছে, ‘ধর্ষণ বা ধর্ষণ পরবর্তী কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড হবে।’ একই সঙ্গে জরিমানার কথাও আছে। সর্বনিম্ন জরিমানা ১ লাখ টাকা। ৯(৩) ধারায় আছে, ‘যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে এবং উক্ত ধর্ষণের ফলে কোনো নারী বা শিশু মারা যায় তাহলে প্রত্যেকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা মৃত্যুদন্ড, কমপক্ষে ১ লাখ টাকা জরিমানা হবে’। ভারতে এক্ষেত্রে শুধু যাবজ্জীবনের কথা বলা আছে। মহিলা আইনজীবী সমিতির এক জরিপে জানা যায়, নানা কারণে ধর্ষণ মামলার ৯০ শতাংশ আসামী খালাস পেয়ে থাকে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে ‘প্রশাসনে দলীয় লোক থাকার কারণে এসব ঘটনার অপরাধীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যাওয়ার আরেক কারণ। এছাড়া ফৌজদারি আইনের দুর্বলতার কারণে অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি হয় না। এ বিষয়ে ‘জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই এরা শাস্তি পাবে।’ শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের অভাবে এখানে ধর্ষণ মহামারী ব্যাপক রূপ নিয়েছে।
ধর্ষন হলো এমনপ্রকার যৌন লাঞ্ছনা যার সাথে শাররীক সম্পর্ক জড়িত, যা এক বা একাধিক ব্যক্তির অপর পক্ষের সম্মতি ব্যতিরিকে শাররীক সম্পর্ক স্থাপনের ক্রিয়াা। এটি বড় ধরনের একটি অপরাধ। এই কাজে বেশিরভাগ সময় শারীরিক শক্তি, বাধ্যতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। যৌন হয়রানির চরম ক্ষতিকর প্রভাব এবং এর ফলশ্রুতিতে অন্যন্য সমস্যা হয়রানির শিকার হওয়া নারীর সাথে সাথে পরিবার এবং সমাজেও বিরুপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। ধর্ষন বলেন কিংবা ছোটখাট ইভটিজিং এর কথাই বলেন; একজন নারীর জন্য তা কল্পনাতীত ভাবে অস্বস্তিকর। পুরুষ ভাইদের কাছে হাতজোড় মিনতি জানাই এ গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকুন। অন্যকে উত্তোক্ত করে আপনি ক্ষনিকের জন্য মজা পাবেন। আপনার সামান্য মজার বিপরীতে বোনটির কি অবস্থা হচ্ছে তা কি একটু ভাববেন? নারীকে সম্মান করার মানেই হলো মায়ের জাতকে সম্মান করা। মা জাতিকে সম্মান করা মানে হলো আপনার জন্মকে সম্মান দেখানো।

আমাদের প্রচলিত ব্যবস্থায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান বেশ কঠিন। সব কিছুতেই আজ দলদারি চলে। আর তাতেকিছু মানুষ এ ধরণের অপরাধ করার সাহস পাচ্ছেন। যৌন নির্যাতনের সঙ্গে ক্ষমতার সম্পর্ক আছে। নারীর ওপর বলপ্রয়োগের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটতে পারে। কখনও দেখা যায়, সামাজিকভাবে কোনঠাসা কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ার আশায় অলীক কল্পনা করতে থাকে। কিন্তু কাক্সিক্ষত সমাধান না পেয়ে, বলপ্রয়োগের পথ বেছে নেয়। ঘরে-বাইরে নারীর উপর আগ্রাসী যৌন আচরণ, যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ সবই পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোতে নারীর অধনস্ততাই প্রকাশ করে নানারূপে। তাই ধর্ষণ, যৌন হয়রানি বা নিপীড়ন, নারীর সম্মতি ব্যতিরেকে তার উপর যে কোনো ধরনের আগ্রাসী যৌন আচরণ ক্ষমতা প্রদর্শনের, দমন-পীড়নের, কর্তৃত্ব করার কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যার জন্ম, সচেতন চেষ্টা ছাড়া নারীবান্ধব, নারীবাদী, সে কোনোভাবেই হয়ে উঠতে পারে না। দৃষ্টিভঙ্গিটা পুরুষতান্ত্রিক বলেই নারীকে তারা গণ্য করে অধস্তন লৈঙ্গিক পরিচয়ের বস্তু হিসেবে যা পীড়নযোগ্য। এটা খুবই আশঙ্কার কথা যে, একজন মেয়ের জন্য সমাজের কেউ নিরাপদ নয়।
যাঁরা উচ্চবিত্ত, সমাজের ওপর তলার মানুষ, এই জাতীয় বিপদ তাঁদের ছুঁতে পারে কম। এদেশে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে নির্ন্মবিত্ত আর মধ্যবিত্তরাই বেশী। যাঁরা নিম্নবর্গের বাসিন্দা, তাঁরা সম্ভবত এখনও ধর্ষণকে স্বাভাবিক জ্ঞান করেন। ভয়ে চুপ থাকেন। ইজ্জত হারিয়েও মুখ খোলেন না। তারা জানেন আইন আদালত করলে তাদেও ভাগ্যে উল্টো বিপত্তি ঘটবে। অন্যায় কওে অপরাধিরা এভাবে পাড় পেয়ে যাচ্ছে বলেই দেশে ধর্ষন বেড়ে গেছে। বর্তমানে আমরা ঈমান শক্তি হারিয়েছি। দেশপ্রেম, সততা, নৈতিক মূল্যবোধ, যৗন কামনা ইত্যাদি নেতিবাচক প্রেরণা আমাদের অন্ধ করে ফেলেছে। তাই সমাজ থেকে সুখ, শান্তি বা আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে। নিঃশর্ত ভালবাসা বা ভক্তি কমে যাওয়ার কারণে আমাদের গঠন মূলক মনোভাব বা সৃষ্টিশীলতা নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রটি শ্রদ্ধার পরিবর্তে আমাদের ভোগের মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে । অনিয়ন্ত্রিত যৌন কামনার প্রভাবে আমাদের মধ্যে ধর্ষণ, জেনা, পরকীয়া প্রেম ইত্যাদির প্রবণতা বাড়ছে। পাশ্ববর্তী ভারতে ধর্ষনের ঘটনা ঘটলে হৈ চৈ পরে যায়। এ ব্যাপারে আমাদের দেশের জনগন একেবারেই নীরব। সচেতন কম। প্রতিবাদ হয়না হলেও খুবই সামান্য । মনে হয় ভারতেই হরে দরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশে নয়!

অন্যায়কারী এমন জঘণ্য অন্যায় করার পরও প্রশাসন নিবর থাকে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ধর্ষণ বৃদ্ধি হওয়ার জন্য সরকার ও তার প্রশাসনের ব্যর্থতায় এ জন্য দায়ী। কারণ যারা এর শিকার হন তারা সবাই দরিদ্রসীমার নিচে বাস করে তাই আইনও এদের পাত্তা দেই না। তবে এর শিকার যদি প্রশাসনের কোন কর্মকর্তার মেয়ে বোন,অথবা মানোনীয় সাংসদদের মন্ত্রীদের মেয়ে বোন হত তা হলে আপরাধিরা শাস্তি পেত। তারা উচ্চ বর্গিয় তাই তাদের সন্তান বোন আর স্ত্রীরা ধর্ষিত হওয়া সুযোগ কম। তবে মেয়েদের প্রতি পদেই বিপদের মোকাবিলা করতে হয় আজকের সমাজে, শ্রেণীবিভাগ ব্যতিরেকেই। উচ্চবর্গিয়রা নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বাস করেন বলে ঘরের মধ্যে তাদের বিপদ কিছু কম হতে পারে তবে পার্টিতে অপরিচিত বা স্বল্পপরিচিতের হাতে , আর ঘরে নিকট আত্বীয় বা পরিচিতজনদের হাতে লাঞ্ছনা জোটার সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। আসল সমস্যাটা হলো কুরুচিপূর্ণ পূরুষদের দৃষ্টিভঙ্গিতে, সেটা কোনো শ্রেণীভাগ মানে বলে মনে হয় না। এমনকি শিক্ষাগত যোগ্যতাও এই মানসিকতা বদলাতে পারে না। তা নাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত স্থানে শিক্ষকের হাতে ছাত্রী, ডাক্তারের হাতে রোগী কিংবা ডাক্তারনী ধর্ষিত হয় কি করে ? যৌন-ব্যভিচার সর্বযুগে, সর্বধর্মমতে নিন্দনীয় নিকৃষ্ট পাপাচার। ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার চূড়ান্ত শাস্তিবিধান মৃত্যুদন্ড। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা হলে এবং সাক্ষ্য-প্রমাণে নিশ্চিত হলে হত্যাকারীর শাস্তিও মৃত্যুদন্ড। কিন্তু আমাদেও দেশে এ যাবৎ যতগুলো ধর্ষণ ও ধর্ষণজনিত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে, তার যথাযথ বিচার সম্পন্ন হযয়েছে এরূপ নজির কমই আছে। হয় চুড়ান্ত রিপোর্টে ঘপলা নয়তো স্বাক্ষপ্রমানে প্রভাবিত করে অপরাধি পার পেয়ে যাচ্ছে ঠিকই। উপরন্তু এর বিচার চাইতে গিয়ে বিচারপ্রার্থীরা নির্বিচারে পাল্টা হত্যার হুমকি কখনো কখনো হত্যার শ্বিকার ও হয়রানির শিকার হন। এ অবস্থা থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। ১৯৯৫ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ বিশেষ বিধান আইন করা হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন করা হয়। ২০০৩ সালে এ আইন আবার সংশোধন করা হয়। ধর্ষণের শাস্তি কত ভয়ানক, তা অনেকেই জানেন না। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ ধারায় ধর্ষণের বিচার হয়। এ আইনে ধর্ষণের সর্বনিম্ন শাস্তি পাঁচ বছরের কারাদন্ড এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ করা হয়েছে। আইনের ৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে সে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডীত হবে। এ ছাড়া অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে। ৯(২) উপধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা ওই ধর্ষণ-পরবর্তী তার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুদে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডীত হবে। অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডীয় হবে। উপধারা ৯(৩)-এ বলা হয়েছে, যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ফলে ওই নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহলে ওই দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যু দন্ডেদন্ডীত হবে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করে, তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডেদন্ডীত হবে ও এর অতিরিক্ত অর্থদন্ড হবে। ধর্ষণের চেষ্টা করলে ওই ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর ও সর্বনিম্ন পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ডেদন্ডীত হবে । এ ছাড়া অতিরিক্ত অর্থদন্ডে দন্ডিতদ হবে। এদেশে ধর্ষণের পাকাপোক্ত আইন আছে ঠিকই কিন্তু আইনেকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। আইনের যারা প্রয়োগ করবেন তারা ঐ আইনের পথে হাটেন না। কখনো অর্থের লোভ কখনোবা হুমকি ধমকিতে শুরুতেই গলদ দেখা দেয়। মামলার চার্যশিট গঠনের সময় ফাক ফোকর থেকে যায়। তাই শেষে রায়ে ধর্ষিত কিংবা নির্যাতনের শিকার লোকজন সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হন। ধর্ষণ যেহেতুক মস্ত অপরাধ এসব মামলাগুলোর ক্ষেত্রে চার্যশিট গঠনের সময় কোন মেজি্েট্রটে অথবা পুলিশের কোন পদস্থ কর্মকর্তার নজরদারিতে করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুড়ান্ত রিপোর্টেও সময় ভিক্টিমের স্বাক্ষাত গ্রহন করা যেতে পারে। তাতে করে গোপনে চার্যশীট দাখিলের ফলে যে জটিলতা তৈরি হয় তা কমে আসবে।

ধর্ষণের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে কেবল আইনের কঠোর প্রয়োগও কোনো কাজ হবে না। এর জন্য প্রয়োজন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে যার যার পারিবারিক বলয়ে ধর্মানুশীলনে একনিষ্ঠতা, পোশাকের শালীনতা, অশ্ল¬ীল সংস্কৃতিচর্চার পরিবর্তে শিক্ষণীয় বিনোদনমূলক ও শালীন সংস্কৃতি চর্চার প্রচলন নিশ্চিতকরণ। আর এটা করতে হলে কেবল রাজনৈতিক বক্তৃতা, আইনের শাসন প্রয়োগ বা ফতোয়া দিলেই চলবে না, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যার যার অবস্থানে থেকে স্কুল-কলেজ মাদরাাসা-মক্তব-মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা সমাজের অন্য বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের সমন্বয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সর্ব্বোপরি কঠোর শাস্তির বিধান ও প্রয়োগ নিশ্চত করতে হবে। নারীকে মর্যাদার আসনে বসাতে হবে। পর নারীকে কখনো মা, কখনো বোন, কখনোবা মেয়ে ভাবতে হবে। তাদের উপর লুলুপ দৃষ্টি নয়; মায়ামমতার দৃষ্টি দিতে হবে। তবেই ধর্ষন কমে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, গবেষক ও কলামিস্ট।

সাম্প্রতিক