ঢাকা : সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ব্যবসা করায় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২২ সেপ্টেম্বর দুদক সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফার সই করা চিঠিতে ওই সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দুদককে অবহিত করতে বলা হয়েছে।দীর্ঘ তিনমাসে ও দুদকের চিঠি কার্যকর হয়নি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ব্যবসায়ী গভীর হতাশা ব্যাক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য যে দূদকের চিঠির সঙ্গে ঐ ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে প্রশান্ত কুমার রায়কে দেয়া আইনি নোটিশ ও সংযুক্ত হিসেবে কিছু নথি দেয়া হয়েছে। এসব নথি পর্যালোচনা করে দুদক দেখতে পেয়েছে প্রশান্ত কুমার রায় এর সঙ্গে প্রবাসী ব্যবসায়ী দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগের বিষয়ে একটি ব্যবসায়িক চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ ফেরত না দেয়ায় আইনজীবীর মাধ্যমে ঐ ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমারকে আইনি নোটিশ দেন। প্রশান্ত কুমার ওই আইনি নোটিশের জবাবও দিয়েছেন।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই আইনি নোটিশ ও দুই পক্ষের মধ্যে ই-মেইলের অনুলিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায় প্রশান্ত কুমার মেসার্স ডেনিম পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মেসার্স ডেনিম এঙ্পোর্ট নামের দুটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বিষয়টি সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫-এর লঙ্ঘন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘সমবায় সচিবের বাণিজ্যিক তৎপরতা?’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব প্রশান্ত কুমার রায় এর সঙ্গে ঐ ব্যবসায়ী ব্যবসার টাকা ফেরত চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এর আগে সরকারের ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও অদক্ষতার জন্য অভিযুক্ত হন প্রকল্প পরিচালক প্রশান্ত কুমার রায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাঁর অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের তদন্তও শুরু করে মন্ত্রণালয়। এসব তদন্তের কোনো সুরাহাও হয়নি। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের কাজকর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি মন্ত্রণালয়ের একাধিক সভায় প্রশান্ত কুমারকে ভর্ৎসনা করেন।অথচ ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পেরই নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব করা হয় তাঁকে।
দুদকের মামলায় যখন সরকারদলীয় এমপিদের জেলে যেতে হচ্ছে তখন একজন বেতনভুক্ত সরকারী কর্মকতা একের পর এক দূর্নীতি করে কিভাবে প্রমোশন পেয়ে যাচ্ছেন তা সকলের কাছে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। [তথ্য সূত্র: বাংলাকথা ডটকম]
< Prev | Next > |
---|