আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুসলিম-প্রধান আট দেশের বিমানে ল্যাপটপ, ট্যাব বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে দুই দফা ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন।
তবে তা আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর এবারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ল্যাপটপ, ট্যাব, ক্যামেরা, ডিভিডি প্লেয়ার এবং ইলেকট্রনিক গেমসের মতো বড় ইলেকট্রনিক যন্ত্র বিমানে নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে যাত্রীরা মোবাইল ফোন বহন করতে পারবেন। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পরিবহন সুরক্ষা বিভাগও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের মধ্যেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।
৯টি এয়ারলাইন্স ও ১০টি বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা-যাওয়া করা ফ্লাইট এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুবাইভিত্তিক দাল্লো এয়ারলাইন্সের একটি বিমান সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিমানে বিস্ফোরণ ঘটে। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, একজন যাত্রী একটি ল্যাপটপের মধ্যে বোমা বহন করছিল।
আফ্রিকাভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আল-শাবাব ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, এবারের নিষেধাজ্ঞায় কোনও সময়সীমা উল্লেখ করা হচ্ছে না। তবে তা কয়েক সপ্তাহ কার্যকর থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এপি জানিয়েছে, গত সপ্তাহজুড়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেলি কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে ভ্রমণ নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এবারের ‘ইলেকট্রনিক মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। ক্ষমতা গ্রহণের এক সপ্তাহের মধ্যেই চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দেশগুলো হলো - ইরাক, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন। যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদীদের প্রবেশ বন্ধের যুক্তি দেখিয়ে ওই আদেশ দেন ট্রাম্প। কিন্তু সমালোচকরা একে বৈষম্য বলে আখ্যায়িত করেন। নোবেল বিজয়ী শিক্ষা অধিকারকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ট্রাম্পের এ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেন। পরে সিয়াটলের একজন বিচারক ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও সান-ফ্রান্সিসকোভিত্তিক তিন বিচারকের প্যানেল তা খারিজ করেন।
এরপর সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর স্থগিত হয়ে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। নতুন জারি করা নিষেধাজ্ঞায় আগের তালিকায় থাকা ইরাককে বাদ দেওয়া হয়। তবে অপর ছয়টি দেশের নাগরিকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। ৬ মার্চ জারি করা নতুন নিষেধাজ্ঞাকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে ম্যারিল্যান্ড এবং হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের আদালত তা স্থগিত করেন। সূত্র: বিবিসি।
< Prev | Next > |
---|