আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বে ‘চেপে বসা’ সমস্যাগুলোর সমাধানে রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্কের বিরোধীদের সমালোচনা করে শনিবার তিনি একাধিক টুইট করেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে জয়ী করতে সহায়তার চেষ্টা করেছিলেন বলে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাদের লক্ষ্যে করে টুইটে বলেন এসব ব্যক্তি ‘নির্বোধ লোক, অথবা বোকা’।
প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের প্রচার শিবিরে সাইবার হামলার জন্য ডেমোক্রেটদেরই দোষারোপ করেছেন ট্রাম্প। সার্ভারে হ্যাকারদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার জন্য তাদের ‘চরম গাফিলতি’ দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকা ‘কোনো খারাপ কিছু নয়’ এবং ‘শুধু নির্বোধ ব্যক্তি বা বোকারাই মনে করবে যে, এটা খারাপ!’তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সমীহ করবে বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
নির্বাচনী প্রচারের সময়ও অনেকবারই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহের কথা বলেছিলেন নিউ ইয়র্কের এই আবাসন ব্যবসায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা নির্বাচনী প্রচারে রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের যে দাবি করে আসছেন তা নিয়েও বারবার প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। গত শনিবার টুইটে তিনি বলেন, এই হ্যাকিং নিয়ে আলোচনার একমাত্র কারণ হচ্ছে, ডেমোক্রেটরা যে ক্ষতির শিকার হয়েছেন তা এত বড় যে তাতে তারা ‘পুরোপুরি লজ্জিত’। ট্রাম্প একথা বলেন ডেক্রোমেটিক ন্যাশনাল কমিটিকে ইঙ্গিত করে, নির্বাচনী প্রচারের সময় তাদের ই-মেইল অ্যাকাউন্ট দখলে নেয় হ্যাকাররা। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, যাতে বলা হয় ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারিকে হেয় করে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন!
এতে বলা হয়, “রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থায় ধস, দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারিকে কলঙ্কিত করা, নির্বাচনে তার জয়ের পথ কঠিন করে তোলা এবং জয়ী হলে তার প্রেসিডেন্সিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমাদের মূল্যায়নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ২০১৬ সালের প্রচারণায় প্রভাব বিস্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আমাদের আরও মূল্যায়ন, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে পুতিন ও রাশিয়ার সরকারের পরিষ্কার পক্ষপাতিত্ব ছিল। শুক্রবার ওই প্রতিবেদন নিয়ে গোয়েন্দা প্রধানদের বক্তব্য শোনার পর ট্রাম্প রাশিয়া নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের মধ্যে ‘যারা এই কাজ করেছেন তাদের প্রতি প্রচ- শ্রদ্ধা রয়েছে তার’।
তবে এটা নির্বাচনের ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে দাবি করেন তিনি। এই প্রতিবেদন নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি রাশিয়া। তবে আগে বেশ কয়েকবারই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে মস্কো। হ্যাকিংয়ের এই ঘটনা নিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশিয়ার ৩৫ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। জবাবে পাল্টা কূটনীতিক বহিষ্কারের প্রস্তাব নাকচ করে সে সময় পুতিন বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। তার আগেই ওবামা রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন দেশে যাদের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছিলেন তাদের সরে যেতে হচ্ছে। নিউ জিল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্ক গিলবার্ট টুইট বার্তায় রয়টার্সকে বলেছেন, “২০ জানুয়ারি আমি চলে যাব। ট্রাম্প শিবিরের চাওয়াতেই এটা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এতে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র জার্মানি, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে কংগ্রেস অনুমোদিত রাষ্ট্রদূত ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রকে কয়েক মাস চলতে হবে বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর।
< Prev | Next > |
---|