oil-স্টাফ রিপোর্টার: জ্বালানি হিসাবে দেশে কেরোসিনের ব্যবহার কমছে। টানা তিন বছর দেশে কেরোসিন আমদানি না হলেও বেড়েছে ফার্নেস অয়েলের আমদানি। মূলত গ্যাস সংকটের কারণে তেলনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ায় ফার্নেস অয়েলের ব্যবহারও বাড়ছে। যার প্রভাবে টানা তিন বছর ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ফার্নেস অয়েলের আমদানি। বিগত ২০১৪-১৫ অর্থবছর দেশে ফার্নেস অয়েল আমদানি হয়েছিল মোট ১৩ লাখ টন। ২০১৫-১৬ অর্থবছর আমদানি হয় ১৪ লাখ টনের কিছু বেশি। চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে আমদানির পরিমাণ সাড়ে ১৪ লাখ টন ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসেই (জুলাই-মার্চ) ফার্নেস অয়েলের আমদানি আগের অর্থবছরের মোট আমদানিকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০০৯ সালে দেশে কেরোসিন আমদানি হয়েছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ১০৩ টন। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে পণ্যটির আমদানি কমতে থাকে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে ২৮ হাজার ৩৭৬ টন কেরোসিন আমদানি হয়। তারপর থেকে কেরোসিন আমদানি স্থগিত রাখে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিপিসি। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চাহিদার প্রেক্ষিতে কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে ফার্নেস অয়েলের আমদানি। সরকার ও বেসরকারি খাতের জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় ফার্নেস অয়েলের চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ফার্নেস অয়েলনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণও হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি। এ দুই কারণে পণ্যটির আমদানি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২ হাজার ৪০২ কোটি টাকার মোট ১০ লাখ ২ হাজার ২৮৮ টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়। বিপরীতে চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৯০ কোটি টাকার মোট ১৪ লাখ ৫১ হাজার ১৯৪ টন ফার্নেস অয়েল। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের বাকি ৩ মাসের হিসাব করলে ফার্নেস অয়েলের আমদানি ২০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশে ফার্নেস অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে এটি হবে নতুন রেকর্ড।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের প্রাপ্যতা নেই বললেই চলে। তাতে দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অধিকাংশ সময়েই ফার্নেস অয়েলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আগামীতে দেশে কয়লার পাশাপাশি ফার্নেস অয়েলই বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল উপাদানে পরিণত হবে।

সাম্প্রতিক