স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জোট গঠনের পর সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আলোচনার মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদলের আভাস দিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সরকারে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিত্বকারীদের উঠিয়ে নেওয়া বা মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ দেখা যাবে কি না- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখুন কেবিনেটের একটা ‘রিশাফল’ তো হয়ই। হয়তো একটা হবে, অনেক দিন হয়ে গেছে। সেখানে কারা থাকবেন কারা থাকবেন না সেটা তো একান্তভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এটা আমরা কেউ জানি না। শিগগিরই রদবদল কি হচ্ছে? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আই ডোন্ট নো, আই ডোন্ট নো এক্সাটলি। সেটা আমি জানি না। যখন হবে, চাঁদ উঠলে সবাই দেখবেন! জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জোট গঠনে একটি ‘চমক’ আছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ‘চমক’ দেখার জন্য আগামি দেড় বছর অপেক্ষা করতে হবে। জাতীয় পার্টি কি মহাজোটে নেই? প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার মনে হয় এটা একটা ভুল ধারণা যে, জাতীয় পার্টি মহাজোটে আছে।
জাতীয় পার্টি তো মহাজোটে নেই। এখন না, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন, সেই নির্বাচনে আপনাদের নিশ্চয়ই মনে থাকার কথা জাতীয় পার্টি আলাদা ইলেকশন করেছে। জাতীয় পার্টি ঐক্যমতের সরকারে আছে। এটা মহাজোট সরকার না, এটা আমি অত্যন্ত ক্লিয়ার অ্যান্ড লাউডার। এ ব্যাপারে আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, জাতীয় পার্টি ২০১৪ সাল থেকে মহাজোটে নেই। তারা এখন যেটা আছে সেটা ঐক্যমতের সরকার। তারা একটা জোট করবে এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এটা এরশাদ সাহেবের সিদ্ধান্তের ব্যাপার, তিনি জোট করবেন। কাদের বলেন, সংখ্যার দিক থেকে ১৪ দল, ২০ দল সব ছাড়িয়ে একেবারে ৫৮-তে চলে গেছে, তিনি (এরশাদ) বলেছেন আর দু’টো দল নাকি যোগ দেবে। সব মিলে ৬০ হয়ে যাবে। এটা একটা চমক আছে। এই যে ৫৮ সদস্যের যে অ্যালায়েন্স, এটা বাংলাদেশে বোধ হয় রেকর্ড। এবং এটার চমক আছে। তবে চমকের রেশ কাটতে কত সময় লাগবে সেটার জন্য আগামি নির্বাচন পর্যন্ত মনে হয় অপেক্ষা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ আগামি নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট করেছেন, এটা আপনাদেরই কোনো কৌশল কিনা- প্রশ্নে কাদের বলেন, আমরা কেন কৌশল করবো। আমাদের কোনো কৌশল করার দরকার নেই। তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে কেউ অ্যালায়েন্স করলে, নির্বাচনী অ্যালায়েন্স তো আমরা করি। আমরা আহ্বান করবো, সেটা আমাদের যে একটা নীতিমালা আছে, এটা তো স্ট্রাটেজির ব্যাপার। আদর্শের কোনো বিষয় নয়। কিন্তু আবার যখন নির্বাচনী ঐক্য হয়, নির্বাচনী ঐক্য আর আদর্শিক এক নয়। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক কিছুই ঘটবে। রাজনীতিতে অনেক ভাঙাগড়া হবে, জোট হবে আবার জোট ভাঙবে। আবার জোটের থেকে কেউ সরে যাবে, কেউ যোগ দেবে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনের সামনে স্বাভাবিক ঘটনা। তবে রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে, বিশেষ করে জোটের ক্ষেত্রে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। নির্বাচনের আগে যে জোট হয়, জোটের ব্যাপারে এখনও দেড় বছর বাকি। দেড় বছরে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যায় কত জল গড়িয়ে যায়।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে এ মুহূর্তে কোনো দ্বন্দ্ব আছে কিনা, প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আদর্শগত দিক থেকে তো কনফ্লিক্ট আছেই। ইলেকশন হলো একটা স্ট্রাটেজিক বিষয়। এটা ভিন্ন বিষয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটের ক্ষেত্রে এরশাদের জোটই শেষ কথা নয়- মন্তব্য জানতে চাইলে কাদের বলেন, এরশাদ সাহেবের মনে কী আছে সেটা তাকেই জিজ্ঞাস করুন। আমাদের সঙ্গে কোনো টানাপোড়েন এ মুহূর্তে নেই। নির্বাচন এগিয়ে আনার জন্য জোট কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে, সংবিধান সম্মতভাবে। নির্বাচন এগিয়ে আনার জন্য এরশাদ সাহেব কী করবেন, তিনি ঐক্যমতের সরকারের আছেন। তার সিদ্ধান্তের উপর নির্বাচন নির্ভর করবে না। বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার কৌশল কিনা- প্রশ্নে বলেন, সময় বলে দেবে এখানে কার হাত আছে।
< Prev | Next > |
---|