স্টাফ রিপোর্টার: একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া সাজার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারকের বেঞ্চে গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে এই রিভিউ শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিন প্রায় এক ঘণ্টা শুনানির পর এ মামলার কার্যক্রম আজ সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত সাঈদীর পক্ষে প্রথমে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার বক্তব্যের পর রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলে সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদ- দেওয়া হলেও সেই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনে খালাস চেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদ-ের রায় পুনর্বহাল চাওয়া হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদ- দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে যে রায় দেয়, তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদ-ের আদেশ আসে। আপিলের রায়ে ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে হত্যা, নিপীড়ন, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরে বাধ্য করায় সাঈদীকে ‘যাবজ্জীবন’ কারাদ- দেয়া হয়। যাবজ্জীবন বলতে ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় পর্যন্ত’ কারাবাস বোঝাবে বলে ব্যাখ্যা দেয় আদালত। এছাড়া ৮ নম্বর অভিযোগের একাংশের জন্য সাঈদীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদ- এবং ৭ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদ-ের আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
এর মধ্যে ৮ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আগুন দেও্য়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর ফাঁসির রায় দিয়েছিল। আপিলের রায়ের ১৫ মাস পর ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত এর পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করলে বিষয়টি রিভিউয়ের পর্যায়ে আসে। এরপর গতবছর ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদ-ের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর পাঁচদিনের মাথায় খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন সাঈদী।
< Prev | Next > |
---|