দিনাজপুর : দেশের সবচেয়ে পুরনো ও বড় ঈদগাহ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া আগামী ঈদে দ্বিতীয় স্থানে নেমে যাচ্ছে। কারণ, দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ ঈদগাহ মাঠে পাঁচ লাখ মানুষের নামাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জাতীয় সংসদের হুইপ ও দিনাজপুর সদর আসনের এমপি ইকবালুর রহিমের বিশেষ উদ্যোগে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ঈদগাহ প্রস্তুত করা হয়েছে।
আসন্ন ঈদুল ফিতরে দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের তথা উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। নব নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনারের এই ময়দানে এক সঙ্গে ৫ লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
এ প্রসঙ্গে ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, গোর-এ শহীদ ময়দানে আমরা উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাতে সামিল হতে পারবো ইনশাল্লাহ। ভারতের কুতুবডাঙ্গার মিনার বা বিশ্বের অন্য কোনো দর্শনীয় মিনারের চেয়েও আমাদের এই ঈদগাহের মিনার সুন্দর, মনোমুগ্ধকর ও অত্যাধুনিকভাবে নির্মিত। এই ঈদগাহ ময়দানে আর কোনো স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও জানান হুইপ ইকবালুর রহিম।
এতোদিন দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে।
এদিকে ২৬৬ বছরের পুরো ঈদগাহ শোলাকিয়ায় এ বছর ১৯০তম ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস।
জনশ্রুতি রয়েছে, ইসলামের ঐশী বাণী প্রচারের জন্য সুদূর ইয়েমেন থেকে আগত শোলাকিয়া ‘সাহেব বাড়ির’ পূর্বপুরুষ সুফি সৈয়দ আহমেদ তার নিজস্ব তালুকে ১৮২৮ সালে নরসুন্দা নদীর তীরে ঈদের জামাতের আয়োজন করেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহের মূল আয়তন বর্তমানে ৬.৬১ একর। চারপাশে অনুচ্চ প্রাচীর ঘেরা শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে মোট ২৬৫টি কাতার রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে দুই লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। এছাড়া মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঈদগাহ সংলগ্ন খালি জায়গা, রাস্তা এবং নিকটবর্তী এলাকায় দাঁড়িয়ে সমসংখ্যক মুসল্লি এ বৃহত্তম ঈদজামাতে শরিক হন। গত বছর সেখানে জামাতে তিন লক্ষাধিক মুসুল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, পাকিস্তান আমলে এ মাঠের চারদিকে নিচু দেয়াল নির্মাণ ও দোতলা মিম্বর নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খানে আলম খান মাঠের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর তৎকালীন এলজিআরডি মন্ত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে মাঠের মাইকিং সিস্টেমের উন্নয়ন, মিনার সংস্কার, মাঠে প্রবেশের প্রধান তোরণ নির্মাণ, ৪৫টি ওজুখানা, ১৫টি প্রস্রাবখানা ও পাঁচটি টয়লেট নির্মাণে ভূমিকা রাখেন।
< Prev | Next > |
---|