স্টাফ রিপোর্টার: ‘ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রায়ের পর সরকারের পদত্যাগ করা উচিত’Ñবিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব পদত্যাগের কথা বলেন। ’৭৫-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় সরকার হলো শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার সরকারের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পদত্যাগের প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন। আলমগীর সাহেব, বাংলাদেশ পাকিস্তান নয়। কোন ইঙ্গিতে এ কথা বলছেন, সেটা আমরা জানি।
এ দেশ পাকিস্তান নয়, পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীন হয়েছে। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, কোন দিকে ইঙ্গিত করে পদত্যাগের কথা বলেন; আপনাকে বলি ফখরুল সাহেব, আবারও বলিÑবাংলাদেশে এক-দুইটা আঘাতে স্তিমিত হওয়ার দল আওয়ামী লীগ নয়। শেখ হাসিনার সরকারের ক্ষমতার ভিত ও আওয়ামী লীগের গণভিত্তি অনেক শক্তিশালী। আওয়ামী লীগকে আঘাত করে পরাজিত করা যাবে না। গতকাল শুক্রবার বাংলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদের (বিএনপি) শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান দেশের বাইরে, ভাইস চেয়ারম্যান বিদেশে; কবে আসবে কেউ জানে না। টেমস নদীর পাড়ে বসে বসে চোরাগলি খুঁজছেন, কোন গলি দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায়। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিএনপি আমাদের পদত্যাগ করতে বলে। তারা আট বছরে আট মিনিটের জন্যও রাজপথে উত্তাপ আনতে পারেনি। সেই ব্যর্থতা নিয়ে তাদের টপ-টু-বটম পদত্যাগ করা উচিত। এদিকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর দলের অনেকেই চেহারা পাল্টিয়েছিলেন মন্তব্য করে কাদের বলেন, আমরা কিন্তু পালিয়ে যাইনি। কিন্তু তখন অনেককে বাড়িতে গিয়ে দরজা নক করেও পেতাম না; বাড়িতে থেকেও বলতেন নেই। অনেক কথা, কিন্তু রাজনীতিতে জীবিতদের সম্পর্কে মন্তব্য করা কঠিন।
জীবিতদের নিয়ে সত্য কথা বলা যায় না। কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা সরকারকে বারবার আন্দোলনের হুমকি দিয়ে আসছেন। গত আট বছরে আট মিনিটও রাস্তায় আন্দোলন করতে পারেননি, রাস্তা গরম করতে পারেননি তারা। এই ব্যর্থতার দায়ে বিএনপির সব নেতাকে দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত। গত বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশ হলে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পর আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতো। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, তার (মির্জা ফখরুল) মনের জ¦ালা আমরা বুঝি। আন্দোলনের ডাক দিয়ে ব্যর্থ হয়ে এসব কথা বলছেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে বলতে চাই, মানুষের শক্তি যত কমে যায় তার মুখে বিষ তত উগ্র হয়ে ওঠে। তাদের শক্তি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে আর মুখের বিষ উগ্র হয়ে উঠছে। খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের বাইরে, ভাইস চেয়ারম্যান দেশের বাইরে। তারা এখন টেমস নদীর পাড়ে চোরাবালির ষড়যন্ত্র খুঁজছেন। পঁচাত্তর সালের পর বাংলাদেশের সব চেয়ে জনপ্রিয় সরকার শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার সরকারের জনপ্রিয়তায় তারা ঈর্ষান্বিত। মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, কোন দিকে ইঙ্গিত করে কথা বলছেন? বাংলাদেশ পাকিস্তান নয়। পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আওয়ামী লীগ দুই একটি ঘটনায় স্থিমিত হওয়ার দল নয়। শেখ হাসিনার সরকার ও আওয়ামী লীগের গণভিত অনেক শক্তিশালী। আন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা যাবে না। আমাদের প্রতিজ্ঞা এখনও দুর্বল হয়নি। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আপনাদের মনের ব্যথা আমরা বুঝি। বারবার আন্দোলনের ডাক দিয়ে মরা গাঙে জোয়ার আনতে পারেননি। মাস যায়, বছর যায় আষাঢ়ের তর্জন গর্জনই সাড়। আন্দোলন হবে কোন বছর জানতে চাই? ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ কামাল তোমাদের রোল মডেল। ৪২ বছর পরও শেখ কামাল তরুণ সমাজের জন্য প্রাসঙ্গিক, অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। তিনি আমাদের রোল মডেল। জাসদের প্রচ- দাপটের মধ্যেও শেখ কামাল ছাত্রলীগকে সংগঠিত রেখেছিলেন। আয়োজক সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা র আ ম ওবায়দুল মুক্তাদির, সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন, সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ বক্তব্য দেন।
< Prev | Next > |
---|