fokrulllস্টাফ রিপোর্টার: অনকে ‘অত্যাচার-নির্যাতনের’ পরও বিএনপি কে দমাতে না পেরে আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত দোয়া মাহফিল পূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন আওয়ামী লীগের এত গাত্রদাহ কেন? দেশনেত্রী নড়াচড়া করলে দেশের জনগণ নড়েচড়ে ওঠে। তিনি যেখানে যান লাখ লাখ জনগণ তার কাছে যায়। দেশনেত্রী সমাবেশ করলে আওয়ামী লীগের প্রতিরোধের মুখেও লাখো জনতার ঢল নামে। তাদের গাত্রদাহের কারণ হলো, এতো অত্যাচার নির্যাতন করেছি, এত মিথ্যা মামলা দিয়েছি তাদের কোনো ভাবেই ধমানো যাচ্ছে না। লন্ডন যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে নেত্রীকে বিদায় জানাতে জনগণের ঢল নেমেছিলো। এটাও তাদের কাছে ভালো লাগেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার একের পর এক সমস্যা সৃষ্টি করেই চলেছে। আজকে হজযাত্রীরা সময় মতো হজে যেতে পারছে না। যানজট ও জলাবদ্ধতায় জনগণ আজ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের দোষারোপ করে সরকার পার পেতে চাচ্ছে। এই ব্যর্থতায় আপনাদের পদত্যাগ করা উচিত। সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই। আলোচনায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আল্লাহর ইচ্ছায় খালেদার চোখের সফল অস্ত্রপচার সম্পন্ন হয়েছে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। আজকে যারা অপ্রপ্রচার করছে তাদের অ্যাকাউন্টেবিলিটি নেই। জবাবদিহিতা না আছে দেশের জনগণের কাছে না আছে আল্লাহর কাছে। বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যখন বলবেন ষড়যন্ত্র হচ্ছে তখন বুঝবেন এটা বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র। আপনারা সতর্ক থাকবেন এই সরকার যেন নতুন কোনো ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে না পারে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে ‘দেশের বর্তমান অবস্থার আসল চেহারা’ উঠে এসেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এতে সরকারের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীতে এক দোয়া মাহফিলের আগে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, আজকে যখন সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ের মধ্য দিয়ে দেশের বর্তমান অবস্থার আসল চেহারা তুলে ধরেছেন, তখন তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। গতকাল (গত শুক্রবার) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যে, এখন তাদের খুব দুঃসময়; দুঃসময় কেন? বলছে যে এখন নাকি ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্র চালাতে পারছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এয়ারপোর্টের মধ্যে তিনতলায় আগুন লাগে, সমস্ত বন্ধ করে দিতে হয়।

হজযাত্রীরা যেতেও পারছেন না, একটার পর একটা সমস্যা তৈরি হয়ে যাচ্ছে, তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তোমরা ঢাকা শহরের রাস্তা ঠিক করতে পার না। বাইরের কথা বাদই দেন। আমরা বার বার বলছি, এই সরকার বিশেষ করে এই রায়ের পর্যবেক্ষণের পরে এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে, এদের কোনো নৈতিক অধিকার নেই ক্ষমতায় বসে থাকার। জোর করে বসে আছে, বন্দুক-পিস্তল দিয়ে বসে আছে, পেছনে বন্দুক-পিস্তল না থাকলে দাঁড়াতেও পারবে না এক সেকেন্ড, এটাই হচ্ছে মূল কথা। গত ৮ অগাস্ট লন্ডনের মুরফিল্ড আই হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ডান চোখে অস্ত্রোপচারের পর তার আরোগ্য কামনায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিতে যাওয়া জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদেরকে ধাওয়া দেওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র। আবার বলে কিনা, দেশে তো গণতন্ত্র আছে, গণতন্ত্রের ওপর কোন আকাশ ভেঙে পড়ল যে, আপনাদেরকে সহায়ক সরকার দিতে হবে? আমাদেরকে তোমরা সাধারণ সভা করতে দাও না, আমাদেরকে মাঠের মধ্যে জনসভা করতে দাও না। ঢাকার বাইরে গতকালও চাঁদপুর থেকে আমাকে টেলিফোন করেছিল.. ম্যাডামের আরোগ্য কামনায় মিলাদ করতে চেয়েছিল, তাদেরকে বাইরে মিলাদ করতে দেয়নি। শেষে মসজিদের ভেতরে গিয়ে তারা মিলাদ করেছে। সব জায়গায় এসব কাজ করছে। এখন সেখানে তাদের ভয় যদি মিলাদ করতে গিয়ে এসে বসে পড়ে, এখান থেকে আবার যদি আন্দোলন শুরু না হয়ে যায়, সেখানে ক্ষমতা চলে যায়। যুবদলের নেতৃত্বকে তাদের সংগঠন শক্তিশালী করার তাগিদ দেন বিএনপি মহাসচিব। যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরুর পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নিরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা সালাউদ্দিন টুকু বক্তব্য রাখেন। দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, মোস্তফা কামাল রিয়াদ এবং গোলাম মাওলা শাহিন উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক