স্টাফ রিপোর্টার: ধর্ষণের ঘটনায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সারা দেশের সব ধর্ষণের ঘটনা দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নারী সেল ও সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম। গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সারা দেশে নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ-হত্যা বন্ধ এবং নির্যাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দাবি জানায় বামপন্থি নারী সংগঠন দুটি। সমাবেশে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নারী সেলের সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, সারা দেশে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। বেশিরভাগ জায়গায় সরকারি দলের ছত্রছায়ায় ঘটছে সেটা। কোথাও ছাত্রলীগ, কোথাও যুবলীগ, কোথাও শ্রমিক লীগ- সরকার দলীয় সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত। তনুকে হত্যা করা হল ধর্ষণের পর, সেটার বিচার হল না, সাগর-রুনি হত্যার বিচার হল না। এভাবে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। আমরা সব ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
আইন প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সারা দেশের নারীদের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বানও জানান তিনি। ধর্ষণ কীভাবে বন্ধ করা যায় তার কায়দা বের করতে হবে সরকারকে। আর নারীদেরকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে নিজেদের জন্যই। এ সময় সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সামসুন্নাহার জ্যোৎস্না বলেন, সারা দেশে ধর্ষণ এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে। সরকারের ছত্রছায়ায় যারা থাকে, তারা ধর্ষণ করছে। ট্রাকে তুলে নিয়ে নারীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। তিন বছরের শিশু, যে এখনো নারী হয়ে ওঠেনি- তাকে ধর্ষণ করা হল। এজন্য সব ঘটনায় বিচারের পাশাপাশি গবেষণারও দরকার, কেন মানুষ ধর্ষণ হয়ে উঠছেৃ কেন এভাবে মানসিক বিকৃতি ঘটছে। সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার বলেন, দিনের পর দিন ধর্ষণ মাত্রাতিরিক্তভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। বগুড়ার ঘটনা প্রমাণ করেছে সারা বাংলাদেশ কতটা নাজুক নারীদের জন্য। আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু ধর্ষণ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেন না কেন? গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম এই সংগঠক বলেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদেরকে বাধ্য করতে হবে। ধর্ষণের ঘটনাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় আনার দাবি জানান সিপিবি-নারী সেলের সদস্য আইনজীবী মাকসুদা লাইলী। তিনি বলেন, সবগুলো ঘটনাকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় আনতে হবে এবং তিন মাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে সিপিবির সম্পাদকম-লীর সদস্য জলি তালুকদার বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে বের করা বিক্ষোভ মিছিল হাই কোর্ট সংলগ্ন কদম ফোয়ারায় পৌঁছে শেষ হয়।
< Prev | Next > |
---|