kader newঢাকা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ অসংলগ্ন প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপির রাজনৈতিক ভুলের জন্য জনগণের কাছ থেকে প্রত্যাখাত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে দেওয়া বক্তব্য ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ এক রাজনৈতিক নেত্রীর অসংলগ্ন প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়।’
ওবায়দুল কাদের আজ সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর ‘ভারত সফর ব্যর্থ হয়েছে’ বেগম খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই অত্যন্ত মর্যাদার সাথে বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পরিক সমস্যাগুলির সমাধান করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই স্থল সীমান্ত চুক্তি, সমুদ্র সীমা বিরোধ ও গঙ্গা পানি বন্টনের মত সমস্যাগুলোর সমাধান হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বেই তিস্তা নদীর পানি বন্টন সমস্যারও সমাধান হবে। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানি বন্টনের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আর সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর তার (বেগম খালেদা জিয়ার) কাছে ব্যর্থই মনে হবে।
সময়ে সময়ে ভারতের কাছে দেশ বিক্রির অভিযোগ খালেদা জিয়ার নতুন নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি দেশের মাটিতে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে সীমান্তে সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির সাথে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির যে সম্পর্ক ধ্বংস করেছিল তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অত্যন্ত মর্যাদার সাথে পুনরুদ্ধার হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য সব সময় স্ববিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ ভারতের অঙ্গ রাজ্য হয়ে যাবে, পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ফেনী থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে বিএনপির এ ধরনের মিথ্যাচার দেশের মানুষ ভুলে যায়নি।
ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি’র নেতা অমিত শাহের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের গত নির্বাচনে বিজেপির জয়লাভের পর খালেদা জিয়া ও তাঁর দলের উল্লসিত হওয়ার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত হাস্যকর। ভারত থেকে এখন পর্যন্ত যা কিছু আদায় হয়েছে তা অত্যন্ত মর্যাদার সাথে আওয়ামী লীগ সরকারই অর্জন করেছে।
ভারতের সাথে সই হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশের সাথে অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম দেশের সাথেও রয়েছে। কিন্তু এ সকল চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক নিয়ে কোন সমালোচনা হয়নি।
‘ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সহযোগিতা করেছে এবং তাঁদের অনেক সৈন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে। তাদের সাথে কোন চুক্তি বা সমঝোতা সই হলেই বিএনপি নানা প্রশ্ন তুলে থাকে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু যে সকল দেশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেছে তাদের সাথে ইতোপূর্বে এমন চুক্তি স্বাক্ষরে কোন প্রশ্ন তোলা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে দেওয়া খালেদা জিয়ার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মাধ্যমে কিভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে তা জাতির কাছে প্রমাণ করুন। আর প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে দেশের মানুষের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।
হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হেফাজতে ইসলাম আর কওমী মাদ্রাসা এক বিষয় নয়। সরকার কওমী মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, হেফাজতে ইসলামকে নয়।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আদর্শের সাথে হেফাজতে ইসলামীর আদর্শের কোন মিল নেই। তাই তাদের সাথে আওয়ামী লীগের কোন অ্যালায়েন্স হতে পারে না। সরকার বাস্তবতার ভিত্তিতে কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের অবহেলা করতে পারে না। তাই সরকার কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের দেশের মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেনসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। - বাসস

সাম্প্রতিক