স্টাফ রিপোর্টার: আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আসন সমঝোতার ভিত্তিতেই অংশ নিতে চায়।
নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক বা না করুক আসন সমঝোতার বিষয়টি উভয় দল গুরুত্ব দেবে।
তবে বিএনপির অবস্থানের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে বলে দল দুটির সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, আগামি নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া বা না নেওয়া, তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, গতি-প্রকৃতি এসব কিছুর ওপরই নির্ভর করবে সমঝোতার বিষয়টি কী হবে। এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েই নির্বাচনে আসন সমঝোতার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একই রকম মত বিরোধী দল ও সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির নেতাদেরও।
আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি আগামি নির্বাচনে অংশ নিলে এবং জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে ওই নির্বাচনে প্রার্থী দিলে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসা জাতীয় পার্টির জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তখন নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে। নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টি কতটুকু অবস্থান করে নিতে পারবে এবং কতগুলো আসনে বিজয়ী হতে পারবে সেটা নিয়ে দলটির মধ্যে নানা হিসাব-নিকাশও রয়েছে।
আবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে টানা দুই বার ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগকে একটা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হবে। আগামীতেও সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিশ্চিত করতে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোমতার বিষয়টিকেই আওয়ামী লীগ গুরুত্ব দেবে বলে দলটির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচনে না এলেও গত ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো আসন সমঝোতার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ আলাদভাবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী দিলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কাছে জাতীয় পার্টির কতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে পারবে এবং সংসদে আসন সংখ্যা কী দাঁড়াবে সে বিষয়টিও জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারকদের ভাবনায় রয়েছে বলেও জানা গেছে।
আওয়ামী লীগও রাজনৈতিক কৌশগত কারণে সংসদে বর্তমান প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে সুবিধাজনক অবস্থানেই পেতে চায়। আর বিএনপি নির্বাচনে না এলে জাতীয় পার্টিই আবারও বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। বিগত দুটি নির্বাচনে আসন সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো বিএনপির জোট।
তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতার ভিত্তিতেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। আগামি নির্বাচনেও এ ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনাই বেশি বলে দুই দলেরই নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়। তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলতে বা কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না।
জাতীয় পার্টিংর যারা সংসদ সদস্য ও সরকারের মন্ত্রিসভায় রয়েছেন তারা আসন সমঝোতার ভিত্তিতেই আগামি নির্বাচনেও অংশ নেওয়ার পক্ষে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় পার্টির এক নেতা ও সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আগামি নির্বাচনও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে হওয়ার পক্ষে আমার মত।
তবে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনই কথা বলতে চাই না। জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ইতোমধ্যে দল আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন। পার্টিকে সংগঠিত এবং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। পার্টির রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে এবং কর্মীদের চাঙ্গা করতে তার এ ঘোষণার গুরুত্ব রয়েছে।
< Prev | Next > |
---|