দেশে নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যা ২৯ লাখ ৮৪ হাজার। অথচ লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫১ হাজার। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনের তুলনায় ১০ লাখ ৩২ হাজার লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকের ঘাটতি রয়েছে। বাস্তবে চালক ঘাটতির সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকের মধ্যে মাত্র ১৩ লাখ ২৪ হাজার চালক স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছেন। অবশিষ্টরা নেননি। হয়তো তাদের একাংশ এ পেশায় নেই। তাই আন্দাজ করা যায়, ২৯ লাখ মোটরযানের মধ্যে অর্ধেক গাড়িতেই বৈধ চালক নেই। ১৪ লাখ নছিমন-করিমন, ইজিবাইক, ভটভটি এই হিসাবের বাইরে। এগুলো নিয়ম-কানুন ছাড়াই চলছে। তা ছাড়া, ১৮ লাখ নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের মধ্যে ১১ লাখ বৈধ চালক ছাড়াই চলছে। এখন প্রশ্ন- এমন অদক্ষ চালকদের হাতে যাত্রীদের জীবন কতটুকু নিরাপদ? বাংলাদেশ একটি দুর্ঘটনাপ্রবণ দেশ। সড়ক দুর্ঘটনায় যেসব দেশে অধিক হারে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। আর এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ যে অদক্ষ চালক, তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে লেখালেখি, সভা-সেমিনার হচ্ছে; নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। কিন্তু কোনো বিহিত হচ্ছে না। এ ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে সড়কের পরিধি বাড়ছে। অত্যাধুনিক গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু গাড়ির স্টিয়ারিং ধরবে যে মানুষ, তাদেরকে দক্ষ করার চেষ্টা নেই। দেশে সরকারি আর বেসরকারি মিলে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা মাত্র ৯৮। প্রয়োজনের তুলনায় এ সংখ্যা খুবই কম। দেশের ক্রমবর্র্ধমান চালকের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারি পর্যায়েই সব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে হবে- এমন কথা নেই। বেসরকারি পর্যায়েও হতে পারে, তবে সে উদ্যোগকেও উৎসাহিত করার দায়িত্ব সরকারেরই। উল্লেখ্য, চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
< Prev | Next > |
---|