al bnp-flagঢাকা : বহুল আলোচিত ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি।

দিনটি ঘিরে আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আর বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ কর্মসূচি পালন করবে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে ভাবছে না। দলের নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, বিএনপির সেই শক্তি-সামর্থ্য নেই।

আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় দুইটি স্থানসহ সারা দেশে কর্মসূচি পালন করবে। অপরদিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে সারা দেশে ‘কালো পতাকা’ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারির কর্মসূচিসহ ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা সফলের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কয়েকটি যৌথ ও বর্ধিতসভা করেছে। এসব সভায় নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুবলীগ অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দেবে। যাতে কোনো অঘটন ঘটাতে না পারে কেউ। পাশাপাশি বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘হুঙ্কার বাদ দেন। গণতন্ত্রের পথে আসেন। ২০১৯ সালের শেষে সংবিধান অনুসারে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আসতে আপনি বাধ্য হবেন।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৫ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ ও বিজয়র‌্যালি হবে। রাসেল স্কয়ারে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট, জাতীয় পার্টিসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলগুলো অংশ নেয়। নির্বাচনে ৩০০ আসনের ১৫৩টি আসনের সংসদ সদস্যরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ৫ জানুয়ারি ভোটের দিন ১৪৭ আসনে ভোট হয়। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

অপরদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট নির্বাচন বয়কট করে নির্বাচন বানচালের দাবিতে নির্বাচনের আগের তিন মাস এবং নির্বাচনের পরে কয়েক মাস সারা দেশে একযোগে আন্দোলন শুরু করে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও গণতন্ত্র রক্ষার যুক্তিতে বিরোধিতা মোকাবিলা করে দেশ পরিচালনা করেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের দাবি, দেশের সংবিধান সমুন্নত রাখতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিকল্প ছিল না। যদিও বিএনপিসহ দেশি-বিদেশি নানা চক্র চেষ্টা করেছিল ধ্বংসাত্মক পদ্ধতিতে নির্বাচন বানচাল করতে। কিন্তু বিরোধিদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। বিরোধিতার পরও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে দিবসটি ২০১৫ সাল থেকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে বিএনপিকে অনেক স্পেস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সুযোগে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। তাদের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত আছে।

গত সোমবার রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের যৌথসভায় যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি এখন সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভীত হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি গণতন্ত্র হত্যা দিবসে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আবার এই ষড়যন্ত্র করছে। তারা ৫ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিল করার কর্মসূচি নিয়েছে। এরা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। তারা বিভিন্ন আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করার অজুহাত খোঁজে। বাংলাদেশের মানুষ এই অশুভ শক্তিকে আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য রাজপথে দেখতে চায় না।

সাম্প্রতিক