ershadস্টাফ রিপোর্টার: রাষ্ট্রপতি থাকার সময় এইচ এম এরশাদের রাডার কেনায় দুর্নীতির মামলায় নতুন করে কয়েকজনের সাক্ষ্য নিতে দুদকের রিভিউ আবেদনও আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে গেছে। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যর আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। এরশাদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। খুরশিদ আলম খান পরে বলেন, আপিল বিভাগের এ আদেশের ফলে এ মামলায় নুতন করে সাক্ষ্য নেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকল না।

অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষের ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নিম্ন আদালতে মামলাটি যুক্তিতর্ক পর্যায়ে যায়। এই অবস্থায় গত বছর নভেম্বরে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন করে দুদক।

এ বিষয়ে শুনানি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ২৪ নভেম্বর দুদকের পক্ষে আদেশ দেয়। যে সাক্ষীদের বক্তব্য শোনা হয়নি, তা শেষে করে ৩১ মার্চের মধ্যে এ মামলার বিচার শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এ মামলার আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি হাই কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দেয়। দুদক ওই আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও তা ধোপে টিকল না। ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে।

ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ওয়েস্টিন হাউজের রাডার কিনে রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।

তদন্ত শেষে ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ অগাস্ট এরশাদসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত থাকে।

আইনি বাধা কাটলে মামলা হওয়ার ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ। ২০১৪ সালের ১৫ মে এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন এরশাদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য দেন।

সেদিন অন্য দুই আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেন। মামলার অন্য আসামি ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা শুরু থেকেই পলাতক। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ এই মামলায় সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার দায় থেকে মুক্ত।

মামলার ধার্য তারিখে তার আইনজীবীই তার পক্ষে হাজির থাকেন।

সাম্প্রতিক