hc-hcস্টাফ রিপোর্টার: বিচার শেষ না হওয়ায় এক দশকের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি আটজনকে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত এই রুল জারির পাশাপাশি মামলার নথিও তলব করেছে। সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আগামি ১৫ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতের নথিও তলব করেছে আদালত। সিলেট, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জের কারাগারে এই আট আসামির দীর্ঘদিন বন্দি থাকার বিষয়টি গত সোমবার আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, গতকাল (গত সোমবার) বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে গতকাল মঙ্গলবার আদালত প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল দিয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন কারাবন্দিদের হাই কোর্টে হাজির করা হয়। তবে কবে তাদের হাজির করতে হবে, সেই তারিখ এখনও দেওয়া হয়নি।

বিকালের আগেই হয়তো তারিখটা আমরা পেয়ে যাব। কারাবন্দি ৮ জন হলেন- মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার দক্ষিণ পাউসার গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে মো. জালাল (৫১) কারাগারে আছেন ১৪ বছর ধরে। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে, যেটি মুন্সিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারধীন। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের ছৈনপাড়ার বাসিন্দা জাহেদ আলীর ছেলে সাজু মিয়া (৪৫) ১০ বছর ধরে কারাবন্দি। সাজু মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি নরসিংদীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার পশ্চিম টেংগুরী গ্রামের বাসিন্দা নেকবর আলীর ছেলে মো. তকদীর মিয়া (৩৫) কারাবন্দি আছেন ১০ বছর ধরে। কিশোরগঞ্জের অতিরিক্তি দায়রা জজ (তৃতীয় আদালত) আদালতে তার হত্যা মামলার বিচার ঝুলে আছে। বাগেরহাটের মহেন্দ্রনাথ হালদারের ছেলে অসীম হালদারও কারাবন্দি ১০ বছর ধরে। বাগেরহাট থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। মামলাটি বাগেরহাটের অতিরিক্তি দায়রা জজ আদালতে (প্রথম আদালত) বিচারাধীন। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দোহার গ্রামের ছিফাত উল্লাহ সরদারের ছেলে আসাদুল ওরফে আছা ১০ বছর ধরে কারাগারে। সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার হত্যা মামলাটি বিচারাধীন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার চরলাপাংয়ের বাসিন্দা মৃত লাল মিয়ার ছেলে মো. দানা মিয়া (৫৫) হত্যা মামলার আসামি।

তিনি ১০ বছর ধরে সিলেটের কারাগারে বন্দি। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (তৃতীয় আদালত) মামলাটি বিচারাধীন। দানা মিয়াকে ৮১ বার আদালতে হাজির করা হয়েছে। সিলেটের গোপালগঞ্জ থানার বাদে পাশা গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে সাইফুল আলম ওরফে বেলাল ১০ বছর ৫ মাস ধরে কারাবন্দি। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ আরও দুটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (চতুর্থ আদালত) তার মামলা বিচারাধীন। বেলালকে ৮৭ বার আদালতে হাজির করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল হকের ছেলে সাব্বির আহমেদ ওরফে দুলাল (৪৫) ১০ বছর ৭ মাস ধরে সিলেটের কারাগারে কারাবন্দি। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দব্য আইনের মামলাটি সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (পঞ্চম আদালত) বিচারাধীন। সাব্বিরকে ৯২ বার আদালতে হাজির করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক