rrutyrghসড়ক দুর্ঘটনা কোনোভাবেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত শুক্রবার রাতে ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরো ৩৩ জন। শনিবার রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আরো ১২ জন নিহত ও ৪২ জন আহত হন। রবিবার সকালে নরসিংদীতে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ১২ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বাসযাত্রীসহ ৩০ জন। রাজধানী ও সাভারে পৃথক দুর্ঘটনায় অন্তত আরো দুজনের মৃত্যু ঘটেছে। পর পর তিন দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯ জনের প্রাণহানির ঘটনা দেশের সড়ক নিরাপত্তাকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করল।

২০২০ সাল নাগাদ সদস্য দেশগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে জাতিসংঘ ২০১১ সালে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে। সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশও তাতে স্বাক্ষর করে। কিন্তু ঘোষণা বাস্তবায়নে কোনো পরিকল্পনা কি নেওয়া হয়েছে? সড়ক-মহাসড়কে যান চলাচলে কোনো শৃঙ্খলা নেই। শৃঙ্খলা ফেরানোর কোনো উদ্যোগও দৃশ্যমান নয়। যানবাহনের চালকরা সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। সাধারণত বাংলাদেশে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে দুই ঈদের সময়। এ সময় মানুষের যাতায়াত ও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যায়। ফিটনেসবিহীন অনেক যানবাহন সুযোগ বুঝে দূরপাল্লার রাস্তায় নামে। আবার বর্ষায় ভেজা রাস্তা ও শীতের সময় ঘন কুয়াশার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। গত কয়েক দিন এসব অনুষঙ্গ ছিল না। তাহলে মর্মান্তিক ও প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটল কেন? বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ আছে, দেশের যানবাহন চালকদের একটি বড় অংশের কোনো বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আবার বৈধ লাইসেন্সধারীদের একটি অংশ কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেনি। এসব স্বশিক্ষিত চালকের আরেকটি বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে শিক্ষাগত যোগ্যতা। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের সঙ্গে অনেক চালকের শারীরিক সক্ষমতাও প্রশ্নবিদ্ধ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিচারে দীর্ঘসূত্রতা। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর কোনো কর্মসূচি না থাকায় বছর বছর দুর্ঘটনা বাড়ছে।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিতে হবে। চালকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে ওভারটেকিং বন্ধ করতে হবে। বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা অসম্ভব নয়।

সাম্প্রতিক