ffgj6tgjআন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলমান বিক্ষোভ আরও ব্যাপক ও সহিংস আকার ধারণ করছে। গতকাল শনিবার বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পে প্রবেশ করে পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। বিক্ষোভকারী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে পুলিশের গুলিতে তাদের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশ গুলি ছোড়ার কথা অস্বীকার করেছে। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এ বিক্ষোভের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দার্জিলিংয়ে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকে টানা ৬ষ্ঠ দিনের মতো হরতাল (বনধ) চলছে দার্জিলিংয়ে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার বিমল গুরুঙ্গের কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। এরপর গত শুক্রবার মধ্যরাতে মোর্চা নেতা বিক্রম রাইকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সেন্ট জোসেফ কলেজের অধ্যাপক বিক্রম গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মিডিয়া অ্যাডভাইজার। তার বাবা অমর রাই দার্জিলিঙের মোর্চা বিধায়ক। বিক্রমকে আটক করার পাশাপাশি গত শুক্রবার রাতেই পুলিশ তল্লাশি চালায় বিমল গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ বিনয় তামাঙ্গের বাড়িতে। বিনয়ের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে তার বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে গেছেন কিছু তৃণমূল সমর্থকও। এই দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিংমারি এলাকা। গোলমাল ও উত্তেজনা ছড়াতে অন্যান্য এলাকাতেও। ধীরে ধীরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিতে থাকে পাহাড়। কয়েক হাজার মোর্চা সমর্থক পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে লাঠিচার্জ করতে গিয়েও পিছিয়ে যেতে হয় পুলিশকে। এ সময় মাথায় ইটের আঘাত পান এক মহিলা পুলিশ কর্মী। এরপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের হঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বিশাল জনতাকে তাতেও থামানো যায়নি। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন মোর্চা সমর্থকেরা। সিংমারি পুলিশ ক্যাম্পে ঢুকে এসিপি কিরণ তামাঙ্গকে মোর্চা সমর্থকরা খুকরি দিয়ে কোপান। এর মধ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে সিংমারিতে ও ঘুমে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুরের দিকে চকবাজার এবং সিংমারিতে প্রচুর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এই এলাকাগুলোতে রুট মার্চ করছে সেনা। মোর্চা নেতা বিনয় তামাং-এর দাবি, সেন্ট জোসেফ কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি মোর্চার। আরও পাঁচ মোর্চা সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অবশ্য গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেনি পুলিশ। উল্টো মোর্চা সমর্থকরাই গুলি চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মার। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিক্ষোভের ঘটনাটি ষড়যন্ত্র এবং সশস্ত্র বিদ্রোহীরা মোর্চাকে সমর্থন দিচ্ছে। তিনি বলেন, যা ঘটছে তা একটি গভীর ষড়যন্ত্র। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার কিরেম তামাংকে বিক্ষোভকারী কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা হতবাক। শান্তি রক্ষার জন্য আমরা মোর্চাকে আহ্বান জানাচ্ছি। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি।

সাম্প্রতিক