স্পোর্টস ডেস্ক : অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের পর ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান পিটার হ্যান্ডসকম্বের হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনটি নিজেদের করে নিলো সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৩০৫ রানের জবাবে ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ২২৫ রান তুলেছে অসিরা। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৮০ রানে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ ৫৮ রানে থামলেও, ওয়ার্নার ৮৮ ও হ্যান্ডসকম্ব ৬৯ রানে অপরাজিত আছেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানের ৬৬, সৌম্য সরকারের ৩৩, মোমিনুল হকের ৩১ ও সাকিব আল হাসানের ২৪ রানের সাথে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ৬২ ও নাসির হোসেনের অপরাজিত ১৯ রানের কল্যাণে ৬ উইকেটে ২৫৩ রান তুলে বাংলাদেশ।
৬২ রান নিয়ে শুরু করে দ্বিতীয় দিন নিজের ইনিংসটা খুব বেশি বড় করতে পারেননি মুশফিকুর। অস্ট্রেলিয়ার অফ-স্পিনার নাথান লিঁও’র ষষ্ঠ শিকার হয়ে ৬৮ রানে থেমে যান মুশি। ২৫২ মিনিটের লড়াকু ইনিংসে ১৬৬ বল মোকাবেলা করে ৫টি বাউন্ডারি হাকাঁন টাইগার দলপতি। ষষ্ঠ উইকেটে নাসিরের সাথে ৪৩ রানের জুটি গড়েন মুশি।
তবে নাসির চেষ্টা করেছিলেন নিজের ইনিংসটা বড় করতে। মুশফিকুরের বিদায়ের পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু তার ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার অ্যাস্টন আগারের ডেলিভারিতে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৯৭ বলে ৪৫ রান করে থামেন তিনি। তার ১১৫ মিনিটের ইনিংসে ৫টি চার ছিলো।
এরপর টেল-এন্ডারদের মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ ১১ ও তাইজুল ইসলাম ৯ রানের ছোট্ট দু’টি ইনিংস খেলে বাংলাদেশের স্কোর তিনশ পার করান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাইজুলের বিদায়ে ৩০৫ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। শুন্য রানে অপরাজিত থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান। অস্ট্রেলিয়ার নাথান লিঁও ৯৪ রানে ৭টি ও অ্যাস্টন আগার ৫২ রানে ২টি উইকেট নেন।
নিজেদের ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের কাটার মাস্টার পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের তৃতীয় ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৪ রানে ফিরেন অসি ওপেনার ম্যাট রেনশ।
এরপর দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। বাংলাদেশ বোলারদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন তারা। ফলে শতরানের দোড়গোড়ায় পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়ার দলীয় স্কোর। এমন সময় বাংলাদেশকে উইকেট শিকারের আনন্দে ভাসান বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ৫৮ রানে থাকা স্মিথকে বোল্ড করেন তাইজুল। ফলে বিছিন্ন হয়ে যায় ওয়ার্নার ও স্মিথ জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে ৯৩ রান যোগ করেন তারা। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া ইনিংসে ৮টি বাউন্ডারি মারেন স্মিথ।
দলীয় ৯৮ রানে স্মিথের বিদায়ের পর দলকে সামনে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব পান ওয়ার্নার ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব। সেই কাজটা দক্ষতার সাথেই করেছেন তারা। দিন শেষে ১২৭ রানের জুটিতে অটুট ছিলেন দু’জনে। তাই ২ উইকেটে ২২৫ রান তুলে দ্বিতীয় দিনটি নিজেদের করে রাখতে পারলো অস্ট্রেলিয়া।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৪টি চারের সহায়তায় ১৭০ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত ওয়ার্নার। এই ইনিংস খেলার পথে দু’বার জীবন পেয়েছেন ওয়ার্নার। আর টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ৬৯ রানে অপরাজিত হ্যান্ডসকম্ব। তার ১১৩ বলের ইনিংসে ৫টি চার ছিলো। বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর ও তাইজুল ১টি করে উইকেট নেন।
Next > |
---|