pm-picঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে সরকার সব রকমের পদক্ষেপ নিচ্ছে উল্লেখ করে এর পাশাপাশি তাদের দুর্ভোগ লাঘবে সহায়তা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

আজ সকালে তাঁর কার্যালয়ে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য আর্থিক অনুদানের চেক গ্রহণকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, আমাদের বিত্তশালীরা এই বন্যা দুর্গত মানুষের সেবায় পাশে দাঁড়াবে।’
বিদ্যুৎ বিভাগ ও এর অধীনস্থ সংস্থাসমূহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, শিপার্স কাউন্সিল, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড এবং ইন্সটিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক অনুদান দেয়। এসময় সিলেটের আতিয়া ভিলায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানকালে নিহতদের স্বজনদের অনুকূলে আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
চলমান বন্যার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফসলের বেশ ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে। নদী ভাঙনে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।
দুর্গত মানুষকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের জমিজমা চলে যাচ্ছে, ঘরবাড়ি চলে যাচ্ছে, তাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেয়া হবে, তাদেরকে আবার পুনর্বাসন করা এবং পানি নামার সাথে সাথে তারা যেন চাষাবাদ করতে পারে- সে ব্যবস্থা করা।’ তিনি বলেন, সব ধরনের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস- এইসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা, জানমালের ক্ষতি যাতে কম হয়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ, সকল প্রস্তুতি আমাদের নেয়া আছে।’

সিলেটের আতিয়া ভবনে জঙ্গী হামলায় নিহত লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মোসাম্মৎ সুরাইয়া সুলতানা ও মা সাঈদা করিম, পুলিশ ইন্সপেক্টার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বেগম পারভীন আক্তার ও মা বেগম ফিরোজা খাতুন, পুলিশ ইন্সপেক্টার চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কয়ছরের স্ত্রী ছায়রা ফারহানা চৌধুরী এবং ছাত্রলীগ কর্মী ওয়াহিদুলের মা বেগম সুলতানা আক্তার এবং জান্নাতুল ফাহিমের বাবা কামাল আহমদ কাবুল প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী, অনুদানের চেক প্রদানকালে আতিয়া মহলে নিহতদের স্বজনদের বেদনার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সান্ত¦না দেন।
নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর কাছে সান্ত¦না দেবার ভাষা নাই। যা হারিয়েছে, সেটাও ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।
তিনি বলেন, তাদের ছোট ছোট বাচ্চা আছে, তারা যেন ভবিষ্যতে মানুষ হতে পারে, পরিবারগুলো যেন চলতে পারে। যতটুকু পারি, সাহায্য করে থাকি, চেষ্টা করি।
স্বজন হারাদের পাশে থাকায় তাঁর সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় চেষ্টা করি, যারা স্বজন হারায়, আপনজন হারায়-তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি এটুকু বলবো যে, আমি আছি, আমি দেখবো। কারো কোনো অসুবিধা যেনো না হয়, সেটা আমরা চেষ্টা করবো।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ‘বাবা-মা’সহ পরিবারের ১৮ সদস্যকে হারানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা যে কতো কঠিন, কতো নির্মম, সেটা আমার থেকে ভালো কেউ বোঝে না।
ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অনুদান দুর্গত মানুষের সহোযোগিতায় কাজে লাগবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও ড তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী নসরল হামিদ বিপু, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ একেএম শহিদুল হক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজিবুর রহমান, র‌্যাাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক