ghfx5thস্টাফ রিপোর্টার: দেশের যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি মাধ্যমিক স্কুল নেই, সেখানে একটি করে স্কুল জাতীয়করণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গতকাল সোমবার সংসদে আয়েশা ফেরদাউসের এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা জানান। বেলা ১১টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিতত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। খুলনার সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদীর প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের যে সকল উপজেলায় কোনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নেই সে সকল উপজেলায় একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি করে কলেজ সরকারিকরণের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম চলছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ২৮৫টি বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী শিগগিরই পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে। সাংসদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের যোগ্য বিবেচিত ২৬ হাজার ১৯৩টি নিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৬ হাজার ১২২টি বিদ্যালয়ের জাতীয়করণ হয়েছে।

মামলা, জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বাকি ৭১টির কাজে বিলম্ব হচ্ছে। জাতীয় পার্টির এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দেশের কিছু সরকারি ও বেসরকারি কলেজে নিজস্ব অর্থায়নে ডিজিটাল আইডি কার্ড চালু করা হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজেদের উদ্যোগে এ কার্যক্রম চালু করতে পারে। সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এরূপ কার্যক্রম চালু করার বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, সারা দেশে বর্তমানে ১৯ হাজার ৮৪৭টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকবিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে ৩৩৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১২টি উচ্চমাধ্যমিকবিদ্যালয় সরকারি; বাকি ১৯ হাজার ৫১০টি প্রতিষ্ঠান বেসরকারি। আওয়ামী লীগের এমপি ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘শিক্ষা আইন’ এর খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খসড়াটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। মন্ত্রী বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতের শিক্ষাঙ্গনে পাঠদানের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকার সুযোগ নেই।

এরপরও অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষা অর্জনের কৌশল হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের (সেকায়প) আওতায় সারা দেশে গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ২৯ লাখ ৭০ হাজার ২৫২টি অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের জন্য বিভিন্ন সময়ে মোট আট হাজার ৯১৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রকল্পটির আওতায় চার হাজার ৮০০ জন অতিরিক্ত শিক্ষক আছেন বলে জানানো হয় সংসদে। রহিম উল্লাহর প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০০টি উপজেলার মধ্যে ৪২টির নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। চারটির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৮৯টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজির প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, দেশে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৪২, উচ্চ মাধ্যমিকে ১:১৪ এবং ডিগ্রিতে ১:২৬। এদিকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজউক থেকে প্লট না পাওয়া সংসদ সদস্যদের সংখ্যা সংরক্ষিত নেই। তবে সংসদ সদস্যদের জন্য পূর্বাচল নতুন প্রকল্পে ১৫৫টি এবং সম্প্রসারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পে ৮৩টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে ১৯ জন সংসদ সদস্যকে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানান মন্ত্রী।

সাম্প্রতিক