3nsddtস্টাফ রিপোর্টার: রেলওয়ের লাইন মেরামত করছিলেন বাদল মিয়াসহ ১০ থেকে ১৫ জন। সময় তখন দুপুর ১টা। প্রায় পাঁচ বছরের একটি শিশু ও তার মা রেললাইন পার হচ্ছিল। সেই সময় সিলেট থেকে ঢাকাগামী সুরমা এক্সপ্রেসের একটি ট্রেন দ্রতগতিতে ছুটে আসছিল। এ সময় বাদল মিয়া দৌড়ে গিয়ে প্রথমে শিশুটির মাকে ধাক্কা দিয়ে লাইনের ওপর থেকে সরিয়ে দেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে থাকা শিশুটি কিছু না বুঝেই ট্রেনের দিকে দৌড় দেয়। তখন দ্রুত সেই শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে বাদল মিয়া নিজেই কাটা পড়ে গেলেন ট্রেনে। কিন্তু শিশুটিকে শেষ রক্ষা করে গেলেন তিনি। গত শুক্রবার এভাবেই ট্রেনের নিচে কাঁটা পড়ে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড লেভেল ক্রসিংয়ে প্রাণ হারালেন রেলওয়ের কর্মচারী বাদল মিয়া (৫৮)। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্মচারী (ক্যান্টনমেন্ট গ্যাং নম্বর-৭৬)। তাঁর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে।

গতকাল শনিবার এসব তথ্য জানান ঢাকা রেলওয়ে থানার এসআই আলী আকবর। তিনি আরো জানান, বাদল মিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এসআই জানান, বাদল মিয়ার পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলের বিয়ে হয়েছে। বাকি সবাই তাদের বাবার উপার্জনের ওপরই নির্ভরশীল ছিল। তাঁর মৃত্যুর ফলে তাদের পরিবার অনেক বড় ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে।

এই বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার জানান, ঘটনাটি অনেক দুঃখজনক। বাদল মিয়া নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মা-মেয়েকে বাঁচাতে পারলেও নিজের জীবন রক্ষা করতে পারেনিই। তাদের রেললাইন থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ট্রেনের গতির কারণে তিনি আর লাইন থেকে বের হতে পারেননি। ওসি জানান, এই ঘটনায় ঢাকা রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ট্রেনে কাটা পড়া বাদল মিয়ার পরিবার কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালনকালে কেউ মারা গেলে অবশ্যই তাঁর পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে।

সাম্প্রতিক