dudukkkস্টাফ রিপোর্টার: সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের দুর্নীতি রোধে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমকে দু’টি ডিও লেটার (আধা সরকারি পত্র) পাঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। চিঠি পাওয়ার পর সরকারের বিভিন্ন কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবও। এ চিঠি পেয়ে কয়েকটি দপ্তর নড়ে-চড়ে বসেছে বলেও দুদকের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। দুদক বলছে, তারা দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি রোধে কাজ করছে। এজন্য সকলকে নিজ নিজ স্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা, দুদকের একার পক্ষে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব নয়। দুদকের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুদকের চেয়ারম্যানের চিঠিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের দুর্নীতি রোধে একযোগে কাজ করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরকারি সব অফিসের সামনে অভিযোগ তথ্যকেন্দ্র, ই-মেইল ও হটলাইন সেবার মান বাড়ানোর জন্যও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা, বর্তমানে দুদকের প্রধান কার্যালয় ও বিভাগীয় কার্যালয় ছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তার চিঠিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে বলেন, দুর্নীতির ধূসর এলাকাগুলোর (গ্রে-এরিয়া) বিষয়ে ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করতে চায় দুদক। সবাইকে হাতে হাত রেখে দুর্নীতির প্রতিরোধ করতে হবে। দুদকের একার পক্ষে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়। এজন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অবহিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সহযোগিতা চায় দুদক। এদিকে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া সুপারিশমালায় দুদক বলেছে, প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন সব দপ্তরে দুর্নীতির অভিযোগ তথ্যকেন্দ্র থাকতে হবে। যেখানে নাগরিকরা দুর্নীতির অভিযোগ দিতে পারবেন’। ‘ই-মেইল ও হটলাইনেও সেবার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য অন্তত একবার দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ বিষয়ক বিধি-বিধান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া চিঠিতে সরকারি কেনাকাটা, টেন্ডার, প্রকল্প গ্রহণ ও বিভিন্ন নিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি করার কথাও দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দুদকের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলেন, দুদক দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি রোধ করা দুদকের একার পক্ষে সম্ভব নয়, যদি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দুর্নীতি রোধে এগিয়ে না আসে। এজন্য দুর্নীতি রোধে দুদকের পক্ষে থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আশা করি, এ চিঠি পাঠানোর ফলে সরকারি দপ্তরের দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি রোধে দুদকের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এখনো দুর্নীতি রয়েছে। এজন্য দুদকের পক্ষ থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাড়া দেবে- এটি আশা করছি। দুর্নীতি কখনো একার পক্ষে রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে আগে এগিয়ে আসতে হবে। যদিও সেটা আগে হয়নি। তাই এখন দুদকের ডাকে সাড়া দেওয়াকে সাধুবাদ জানাই।

সাম্প্রতিক